সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ঈসমাইল। বিচারে আসামী প্রদিপ কুমার দাশ ও আসামী লিয়াকত আলীর মূত্যুদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
এবং টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল এবং কনস্টেবল সাগড় দেব ও রুবেল শর্মার যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষনা করেছেন। আরো তিন আসামী কক্সবাজার জেলার বাহারছড়া গ্রামের মোঃ নুরুল আমিন, মোঃ নিজাম উদ্দিন, মোঃ আইয়াজকে যাবজ্জীবন প্রদান করেছেন। বাকি আরো ৭ আসামী যারা ছিলেন তাদেরকে খালাশ প্রদান করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাটি ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের তল্লাশী চৌকিতে বাহারছড়া তদন্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর নিজ হাতে সেনাবাহিনী থেকে অবসর হওয়া মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান পিএসসিকে গুলি করে করা হয়।
এই হত্যার ঘটনাটি ঘটার পরে ওসি প্রদিপ ও এসআই লিয়াকতের যোগ সাযোশে বহু নাটকীয়তার ঘটনা ঘটে। তারা মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সাথে থাকা সহযোগি সায়েদুল ইসলামকে (সিফাত) গ্রেফতার করে যেখানে সিনহা ছিলেন, সেই নিলীমা রিসোর্টে যান এবং মেজর সিনহার ভিডিও সহযোগি শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন নুরকেও আটক করে শিপ্রা ও সিফাতকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায় আর তাহসিনকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে শিপ্রা ও সিফাত জামিনে মুক্তি পায়।
মেজর সিনহা হত্যাকে কেন্দ্রকরে মোট ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে দুটি করা হয়েছিলো টেকনাফ থানায় ও একটি রামু থানায়। দুটি মামলা ছিলো মাদক রাখার জন্য ও অন্যটি ছিলো পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে।পুলিশের করা তিনটি মামলাই ছিলো মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দ্যেশ্য প্রণীত। যার কোন সত্যতা পায়নি র্যাব।
মেজর সিনহাকে হত্যা করা হয়েছে এই মর্মে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এই হত্যা মামলায় ওসি প্রদিপ কুমার দাশ, এসআই লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যকে আসামী করে ওই বছরের ৫ই আগষ্ট আদালত মামলাটি গ্রহন করেন। এই ৪টি মামলার তদন্তের দ্বায়ীত্ত পায় র্যাব।
গত বছরের ২৭ জুন ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। র্যাব এই মামলাটির অতি গুরুত্ত সহকারে একটি সঠিক তদন্ত করে এবং ওসি প্রদিপসহ ১৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে ১১ জনই পুলিশ সদস্য। বাকী ৩ জন ছিলেন গ্রামবাসি।