শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ডা. আহসান হাবিব আদনান । গরীবের ডাক্তার নামেই যার পরিচয় । তিনি গরীব অসহায় মানুষের পাঁশে থেকে চিকিৎসাসেবার হাত বাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। স্বপ্নই যার মানুষকে নিয়ে। কিন্তু প্রতিনিয়তই প্রচার বিমুখ মানুষটি। তাই তিনি কখনোই গণমাধ্যমে তার কাজগুলোকে প্রচার করার চেষ্টা করেনি।
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’ এমন কথা এখন কাল্পনিক কথা বলেই মনে হয়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি মানুষের হৃদয়ে মায়া মমতা বিচার বিবেক জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি না করতো তবে এসব কথা ইতিহাসের পাতায় আসতো না। আর এ মূল্যবান কথাটির যথার্থ খুঁজে পাওয়া যায় ডা. আদনানের জীবনাদর্শে।
তিনি শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক। সার্বক্ষণিক মেডিকেল কলেজের নিজ দায়িত্বের পাঁশাপাশি চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। মন দিয়ে রোগীর সব কথাই শোনেন তিনি। সমস্যার কথা শুনে সঠিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন এই ডাক্তার ।
অবসর সময়ে তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষগুলোর কাছে থেকে ভিজিট নেন না। কাউকে বাধ্য করেন না ভিজিট দিতে। গরীব অসহায়দের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়ে যান। তিনি তার নিজ এলাকায়ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুনাম কুঁড়িয়েছেন।
শুধু জামালপুর না, জেলার বাইরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝেও চিকিৎসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধিদের কোন প্রকার চিকিৎসা ফি ছাড়াই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তিনি। তাদের ওষুধপত্র, যখন যা লাগে, সবকিছু দিয়ে সাহায্য করেন।
কথা হয় এক রোগীর সাথে
তিনি জানান আমার অবস্থা এতই খারাপ ছিলো যে, আমাকে বড় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হতো, অপারেশনের জন্য কিন্তু ডাক্তার নান্দিনাতে তালুকদার ক্লিনিকেই ভর্তি করায় আমাকে । রোগীর অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কথা ভেবে চিকিৎসক আহসান হাবিব আদনান ঝুঁকি নিয়ে সেখানে না পাঠিয়ে নান্দিনার ছোট একটি প্রাইভেট হাসপাতালেই তার চিকিৎসা করেন। যথাসময়ে সুস্থও হয়ে ওঠে সে রোগী। এরকম বিনামূল্যে শত শত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই ডাক্তার।
এলাকার অনেক অসহায় মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডা.আহসান হাবিব আদনান একজন ভালো মানুষ। সে গরীব অসহায় মানুষের কথা ভাবে প্রতিনিয়ত। গরীব অসহায় মানুষের কাছে শুধু চিকিৎসা ফি নেন না। কখনোবা তিনি নিজেই রোগীর ভরণ পোষণ করেন।
এ ব্যাপারে ডা. আদনানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ।
আমি শুধু একটা জিনিস চেষ্টা করি,
কেউ আমার কাছে কোন বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আমি “না ” করি খুব কম।
নিজে সরাসরি বা চিকিৎসা জ্ঞান দিয়ে বা কোন বিশেষ পরামর্শ দিয়ে বা কথা দিয়ে বা ফোন করে বা কোন সুপারিশ করে বা কোথাও রেফার্ড করে বা কোথায় গেলে তিনি তার কাংখিত সেবা পেতে পারেন সেটা তাকে দেখিয়ে দেই।
সাংবাদিকঃ আপনার এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তী চিন্তা ভাবনা কি?
অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গ্রামে থাকতে চাননা, নানাবিধ সুবিধা অসুবিধা বিবেচনায়। আমি কেন জানি প্রথম থেকেই গ্রামে থেকে গেছি, গ্রামের মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং তাদের কাছ থেকে যে আলাদা সম্মান ও ভালোবাসা পাই সেটা কোটি টাকা দিয়েও সম্ভব না।
নাম মাত্র পরামর্শ ফি কিংবা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সুলভ মূল্যে পরীক্ষা নিরিক্ষার ব্যাবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যখন যেভাবে ডেকেছে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা উক্তি আমার খুব ভালো লাগেঃ
“মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক
আমি তোমাদেরই লোক”
এই আলোকে আমি আমার ভবিষ্যত সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে চাই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাওফিক দিলে জীবদ্দশায় একটি বিশেষায়িত দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান করে যেতে চাই, ওয়াকফকৃত সেই প্রতিষ্ঠান থেকে যেন আমি পরপারে দোয়া পাই সেই মনোবাসনা পোষণ করি।