1. admin@dailyshadhinbarta.com : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ঘুষ ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিনাজপুরে ২১০ রাউন্ড গুলিসহ ১৭টি আগেন অস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে সকল কর্মস্থল থেকে ভারতীয় নাগরিকদের প্রত্যাহারের দাবি জবিতে শত, সাহসি ও যোগ্য ভিসি চান শিক্ষরা বাংলাদেশী ইলিশ না পেয়ে বিপাকে ভারতীয়রা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য রেজাউল করিম লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সাড়ে ৪ কোটি টাকা প্রদান করে আশা আজ মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ পহেলা অক্টোবর মধ্যে গুচ্ছ’র ক্লাস শুরুর দাবি সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপির ৪২২ নিহত হয়েছে কাজীপাড়া ও মিরপুরের মেট্রো স্টেশন সেপ্টম্বরেই চালু হচ্ছে লোহাগাড়ায় পুকুরে পড়ে তৌছিপ নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে লোহাগাড়াতেও যানজটে অতিষ্ট নগরবাসি সংবাদ প্রকাশের পর জগন্নাথে হলের দখল ছেড়েছে ছাত্রদল

পুলিশ সদস্যদের সামনেই পাড়ার সন্ত্রাসী কায়দায় গলা চেপে ধরে প্রথম আলোর জৈষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে

মোঃ তরিকুল ইসলাম
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ২২ মে, ২০২১
পাড়ার সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের অফিস সহকারি পারভীন সুলতানা পলি।

সোমবার ১৭ মে প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম পেশাগত দ্বায়ীত্ত পালনের উদ্দেশ্যে ক‌রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাকে অত্যান্ত ন্যাক্কার জনকভাবে ৬ ঘন্টা আটকে রেখে অপমান, অপদস্ত, হেনস্তা ও পাড়ার সন্ত্রাসী কায়দায় পুলিশ সদস্যদের সামনেই স্বাস্থ্য বিভাগের এক অফিস সহকারি পারভীন সুলতানা পলি (এ ঘটনার পর থেকে তিনি আর অফিসে আসেননি) সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরেন।

এক পর্যায়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলে শাহবাগ থানায় পুলিশের কাছে তুলে দেন, স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কিছু কর্মকর্তার নির্দেশে। এরপর থেকেই বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সদস্যরা, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হতে থাকে এবং সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশ সদস্যসহ উর্ধতন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন।

কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি অবশেষে স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা ডা. মোঃ শিব্বির আহমেদ ওসমানী (দফতর বদলী করা হয়েছে) বাদী হয়ে দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দ্বায়ের করেন। এর মধ্যে রয়েছে ১০০ বছরের ও বেশি পুরোনো (যে ধারা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে ইংরেজদের আমলে প্রবর্তীত) ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ধারা ৩ ও ৫ এবং ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় নথি চুরির মামলায়।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বের বিভিন্ন গনমাধ্যমগুলো গুরুত্ত সহকারে সংবাদ প্রচার করেন এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে কোন শর্ত ছাড়াই সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো ফলাও করে সাংবাদিক রোজিনার গ্রেফতারের সংবাদটি প্রচার করেছেন। এ বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করেন যে, বিগত দিনে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশের জেড়েই ষড়যন্ত্র মূলকভাবে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আমরা একজন সাংবাদিক যেন ন্যায় বিচার পায় সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি।

প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আসামী করে পরের দিন ১৮ মে (মঙ্গলবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার গণমাধ্যম কর্মীসহ সাংবাদিক নেতারা আশা করেছিলেন ১৮ মে (মঙ্গলবার) সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মুক্তি পাবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত সেদিন রোজিনা ইসলামের মুক্তি মেলেনি।

উল্টো বিবাদী পক্ষের আইনজীবি রোজিনা ইসলামের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর ২০ মে আদালত আবারও শুনানির দিন ধার্য করেন।

এরপর থেকেই সাংবাদিকরা রাজপথে নেমে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হতে থাকে। জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বাংলাদেশের সকল জেলার গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিক নেতারা প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবীতে রাজপথে নেমে পড়ে এবং আন্দোলন এখনো চলমান রেখেছেন।

২০ মে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আবারও আদালতে হাজির করা হলে সকলেই আশা করেছিলেন যে, এবার নিশ্চই তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত এবারও তাঁর জামিন হলোনা। মাননীয় ম্যাজিষ্ট্রেট মহোদ্বয় দু-পক্ষের শুনানি শেষে কোন রায় দেননি এবং ২৩ মে এ বিষয়ে আবার আদালত বসার দিন ধার্য করেছেন। এবারও সাংবাদিক মহলসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ আশা করে আছেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম নিশ্চই ২৩ মে (রবিবার) মুক্তি পাবেন।

সাংবাদিক রোজিনার সাথে যা ঘটেছে সেটি একটি অন্যায় এবং যারা করেছেন তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন, হাসানুল হক ইনুঃ

সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সাথে যা ঘটেছে এবং যারা ঘটিয়েছেন তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

একজন সাংবাদিককে এভাবে ৫-৬ ঘন্টা আটকে রাখার কোন নিয়ম নেই। তিনি সুপরিচিত এবং খ্যাতিমান একজন গণমাধ্যমকর্মী। তিনি বলেন, একজন পুলিশ কনস্টেবল কিভাবে সচিব বা উপ-সচিবের রুমে অনুমতি ছাড়া ঢুকতে পারে।

পুলিশ সদস্যরা কি সচিব বা উপ-সচিবের রুমে টহল দিচ্ছিলেন। তাদেরতো ওখানে থাকার কথা ছিলোনা। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দেহ তল্লাশি এবং তাঁর মোবাইল ফোন কেড়েঁ নেওয়ার কোন অধিকার নেই তাদের। তারা যেটাই করেছে তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

সাবেক মহা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেছেন,

বিষয়টি ঘটনাস্থলেই সমাধান করা উচিৎ ছিলো। এটা থানা বা আদালত পর্যন্ত না গড়াতেও পারতো। যদি সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দোষ ধরা হয় সেটি তাঁর পত্রিকার কর্মকর্তাদেরকে জানাতে পারতেন।

এমন ঘটনায় দেশে একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি নিশ্চই খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধাণ হবে এবং সাংবাদিক রোজিনা আবার নিজ কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2020-2022 Daily Shadhin Barta