ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের রৌশনাবাদ একাডেমির অধ্যক্ষ করিম উল্লাহর দাফনসম্পন্ন হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ১১ ঘটিকায় দক্ষিণ ধর্মপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ পাটোয়ারী জামে মসজিদের সামনে জানাজার নামাজ শেষ হওয়ার পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
শিক্ষকের এমন মর্মান্তিক খবর শুনে ছুটে আসেন হাজারো সাবেক বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী। চারদিকের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের অশ্রুসিক নয়নে ভারী হয়ে উঠে। অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান স্মৃতি শেয়ার করেছে।
দীর্ঘ ৩৫ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় জড়িত আছেন করিম উল্লাহ। গতকাল তাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
সুজিত কুমার দত্ত নামের একজন অভিভাবক জানান,আমার দুটো সন্তানের হাতে খড়ির মহান কারিগর ও অভিভাবক করিম স্যার। তিনি একাধারে একজন শিক্ষক,প্রশাসক, সমাজসেবক ও মানবিক মানুষ যার ঋণ শোধযোগ্য নয়। আজ তাঁর অকাল মৃত্যুতে এই গোটা অস্থির সমাজ এক শিক্ষানুরাগী ও অভিভাবককে হারালো।
জানাজার নামাজে উপস্থিত সাবেক ছাত্র শাহরিয়ার মাহমুদ হায়দার জানায়, স্যার আমাদের শৈশবের প্রধান শিক্ষক। তিনি খুবই সৎ ও ন্যায়পরায়ণ ছিলেন।স্যারের এমন মৃত্যু কখনো কামনা করিনি।
রৌশনাবাদ একাডেমির সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন টিটু জানান, স্যার আমাদের প্রধান শিক্ষক হলেও আমাদের সকল শিক্ষকদের নিজের সন্তানের মত আগলে রাখতেন। আমাদের প্রতি স্যারের স্নেহ ভালবাসার কোন কমতি ছিল না।আমাদের এই ক্ষতি অপূরনীয়।
উল্লেখ্য যে, গত সোমবার দক্ষিণ ধর্মপুর থেকে নিজ বাড়ীর কাজের জন্য শ্রমিক আনতে ছাগলনাইয়া যান শিক্ষক করিম উল্ল্যাহ।পরবর্তীতে কাজের শ্রমিক নিয়ে সিএনজি যোগে বাড়ী ফেরার পথে (ছাগলনাইয়া- বক্সমাহমুদ) সড়কের বক্তারহাট বাজার সংলগ্ন সালাউদ্দিন ইসকান্দার কিং সাহেবের বাড়ীর সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সাথে সজোরে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে মারাত্মক আহত হয়।পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে করিম উল্ল্যাহকে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শিক্ষক করিম উল্ল্যাহ শিক্ষকতা জীবনে ফেনী শাহীন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক সহকারী শিক্ষক ছিলেন । এছাড়া ছাগলনাইয়া একাডেমির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক এবং রৌশনাবাদ একাডেমির অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।