1. info@dailyshadhinbarta.com.bd : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

পটুয়াখালীর রাঙাবালি হতে চলেছে পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র

মোঃ সায়েম খান, রাঙাবালি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

রাঙ্গাবালী সোনারচর সাজছে নতুন সাজে। দেশের তৃতীয় সামুদ্রিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নেওয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। এ লক্ষ্যে এখানে নির্মাণ করা হচ্ছে ইকোপার্ক। সি-বিচের জন্য পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত করা হচ্ছে প্রায় ৯৫ হাজার একর জমি।

হোটেল ও রেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য নেওয়া হচ্ছে পরিকল্পিত উদ্যোগ। জেলা-উপজেলা এবং রাজধানীর সঙ্গে স্থাপন করা হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ। এছাড়াও নেওয়া হচ্ছে নানামুখী ব্যবস্থা। এ সমস্ত উদ্যোগ যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সোনারচর হয়ে উঠবে আরো আকর্ষণীয়। দেশের পর্যটন সম্ভাবনায় উন্মোচন হবে নতুন দিগন্তের। এ আশাবাদ সংশ্লিষ্ট সব
মহলের।

সোনারচরের অবস্থান পটুয়াখালী জেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে। বিশাল এ আয়তন নিয়ে শত বছর আগে সাগড় ফুঁড়ে জেগে উঠেছে এ দ্বীপটি। এর চারপাশেই সাগরের অথৈ নীল জলরাশি।

দ্বীপটিতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার একরের সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের পরে বন বিভাগের উদ্যোগে এ বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়। তার আগে এখানে কিছু মানুষ বসতি গড়ে তুলেছিল। জমি চাষাবাদও হত। কিন্তু সত্তরের প্রলয়ঙ্করী জলোচ্ছ্বাসে গোটা দ্বীপ জনশূন্য হয়ে পড়ে। এরপরেই বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়। স্থাপন করা হয় বন বিভাগের বিট অফিস।

বর্তমানে ম্যানগ্রোভের পাশাপাশি বনজ ও ফলদ বৃক্ষের বাগানও গড়ে তোলা হচ্ছে। এ বনাঞ্চলে রয়েছে প্রচুর চিত্রল হরিণ। বন বিভাগ গত শতকের আশির দশকে এখানে বেশ কয়েকটি হরিণ ছেড়েছিল। এছাড়া, পার্শ্ববর্তী ভোলার চরকুকড়ি- মুকড়ি দ্বীপ থেকেও বিভিন্ন সময়ে বহু হরিণ ভেসে এ বনাঞ্চলে আশ্রয় নেয়।

যা বর্তমানে ব্যাপক সংখ্যায় রূপ নিয়েছে। এছাড়াও বনাঞ্চলে রয়েছে দেশি বাঘ, বন্য শুকর, কুমির,গরু-মোষসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। রয়েছে পাখির কলকাকলি। সোনারচরে রয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বিশাল সি-বিচ। একদিকে, বিশাল ঘন সবুজ অরণ্য। জেলেদের আনাগোনা এবং মৎস্য শিকার। চারদিকে সমুদ্রের অথৈ জলরাশি। বন্য প্রাণী। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার বিরল সুযোগ।আরেকদিকে বিশাল সি-বিচ। সবমিলিয়ে প্রকৃতিকে নির্জনে উপভোগ করার সব সুযোগই রয়েছে এখানটায়।

যে কারণে গত কয়েক বছরে সোনারচর পর্যটকদের কাছে ক্রমে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বন বিভাগের চরমোন্তাজ রেঞ্জ অফিসার দেবদাস মুখার্জী জানান, পর্যটকদের কাছে সোনারচরকে আরো উপভোগ্য এবং আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে ইকোপার্ক স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রস্তাব বন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে। বন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব উদ্যোগেই এ ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, ইকোপার্কের আওতায় একাধিক উঁচু টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এসব টাওয়ারে উঠে পর্যটকরা একান্তে প্রকৃতিকে উপভোগ ও বণ্য প্রাণী দর্শন করতে পারবে। বনের অভ্যন্তরে খালগুলোতে ঘুরে বেড়াতে দ্রুত গতির নৌযান দেওয়া হবে। থাকবে পিকনিক স্পট। নির্মাণ করা হবে রেস্টহাউস। বনের অভ্যন্তরে যাতায়াতে নির্মিত হবে সড়ক। বন্য প্রাণী সংরক্ষণে নেওয়া হবে আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়াও পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হবে নানা প্রজাতির সমন্বয়ে অনন্য সুন্দর গার্ডেনসহ আরো অনেক কিছু। দেবদাস মুখার্জী জানান, প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকেই এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এদিকে, ভূমি দফতর সূত্রে জানা গেছে, সোনারচরের

সি-বিচের প্রায় ৯৫ বর্গ কিলোমিটার অর্থাৎ ২৩ হাজার একর জমি বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এখানে পরিকল্পিতভাবে সি-বিচ গড়ে তোলা হবে। এছাড়া, সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগে হোটেল-মোটেল ও রেস্টহাউস নির্মাণের লক্ষ্যে পৃথকভাবে জমি অধিগ্রহণ এবং বন্দোবস্তেরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Licence No- TRAD/DSCC/210965/2019 and applied for registration.

Community Verified icon
 

Community Verified icon