ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সীমান্তে বল্লামুখার বাঁধ নির্মাণে আবারো শুরু হয়েছে এক তুমূল উত্তেজনা। গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে বল্লামুখার বাঁধ নির্মাণের সময় ৭০ মিটার অংশে কাজ চলাকালীন বিএসএফ এসে কয়েকটি স্কেভেটর বন্ধ করে দিয়েছে ও কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক বসেছে ও বৈঠক শেষে জায়গা পরিমাপ করা হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বল্লামুখার বাঁধের ৭০ মিটার অংশে ৩০ মিটার নোম্যান্সল্যান্ডে রয়েছে। এমন একটি বিষয় দাবি করে বিএসএফ শুরু থেকে বাঁধটি নির্মাণে বাঁধা দিতে চাচ্ছে।
গতকাল সকালে কাজ চলাকালে বল্লামুখার বাঁধের ৭০ মিটার নির্মাণে শেষ হতে না হতেই বিএসএফ এসে কয়েকটি স্কেভেটর বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর থেকে ভারতের ঈশান চন্দ্রনগর ও বাংলাদেশের মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুর ক্যাম্পের বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। দুপুরে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে সীমান্তে ওই জায়গাটি পরিমাপ করা হয়েছে। বিজিবির মজুমদার হাট কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে সেখানে বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াসিন মজুমদার জানিয়েছেন, বিএসএফ সীমান্তে পাঁচ থেকে ছয়টি বাঙ্কার খনন করেছে। বাঁধের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছে। বৈঠকে বিজিবি বলেছে বাঁধ নির্মাণের জায়গাটি নোম্যান্সল্যান্ডে পড়েনি। এজন্য কাজ চলমান রয়েছে।
গত বছর ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট বল্লামুখার বাঁধের ভাঙার কারণে পরশুরামের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বন্যার পানিতে। তাই বাঁধটি পুনঃনির্মাণের জন্য দাবি তুলেছে পরশুরামের প্রত্যেক ইউনিয়নের গ্রামবাসী। গ্রামবাসী তাদের বাড়ি ও সহায় সম্বল বাঁচাতে বাঁধটি যাতে পূর্ণ নির্মাণ হয়েছে সে বিষয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে বাংলাদেশের গ্রামবাসীদের মধ্যে। গত বছর স্মরণ কালের সেই ভয়াবহ বন্যায় জেলার লক্ষাধিক মানুষ ঘরবাড়ি, ফসল ও সহায় সম্বল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। বন্যার ফলে মুহুরি, কহুয়া ও শিলোনিয়া নদীর ১০২ টি স্থানের বেরিবাঁধ ভেঙে যায়। যার মধ্যে ৯৬ টি ভাঙ্গা অংশের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মোট সাড়ে ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। পরশুরামের তোড়ে মুহুরী নদীর তীরবর্তী পরশুরামের নিজ কালিকাপুর সীমান্তের বল্লামুখার বেড়িবাঁধ এর তিনটি স্থানে প্রায় ৫০০ মিটার বেরিবাঁধ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে সেখানকার স্থানীয় এলাকাবাসীর বাঁধটি পুনঃনির্মানের জন্য বারবার দাবি জানাচ্ছে। দীর্ঘ এক মাস ধরে বাঁধগুলো পুনঃনির্মাণ এর কাজ করছে ঠিকাদার।