দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দ্বিখন্ডিত সবুজের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার ২৩ দিনপর বিচ্ছিন্ন মস্তক উদ্ধার সহ সাব্বির হোসেন সবুজ (২৫) হত্যার রহস্য উন্মচন করেছে, জেলা পুলিশ সুপার মারফত হোসাইন ও থানা অফিসার ইনচার্জ এ কে এম খন্দকার মহিবুল ইসলাম এর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম ।
থানা সূত্রে জানা যায়, নির্মম হত্যাকাণ্ডের আসামি দীর্ঘদিন সবুজদের বাড়িতে কাজের লোক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ওই কাজের লোকের কোদালের আঘাতে সবুজের মৃত্যু হয়। সাব্বির হোসেন সবুজ উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের রশিদপুর (সরকার পাড়া )গ্রামের মৃত ইবনে সাউদ সরকার এর ছেলে।
সবুজ নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর সবুজের মস্তক বিহিন দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ |আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন ও ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম খন্দকার মহিবুল ইসলাম, বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাথা উদ্ধার করে । এরপর সকাল ১০টায় ফুলবাড়ী থানা চত্বরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার।
দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন, বলেন, সাব্বির হোসেন সবুজ গত (২৩ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজ হয়। এ সংক্রান্ত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়। এর পেক্ষিতে তাকে খুঁজতে থাকে থানা পুলিশ। এর দুইদিন পর একটি ডোবা থেকে দ্বিখন্ডিত মস্তক বিহীন একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে সবুজের পরিবারের সদস্যরা সবুজের শরীরের একটি বিশেষ চিহ্ন দেখে সবুজের মরদেহ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় ওইদিন ফুলবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সবুজের ছোট ভাই সাদেক হাসান।
পুলিশ জানায়, সবুজের হত্যাকারী আব্দুর হামেদ দীর্ঘ ২০০৫ সাল থেকে সবুজদের বাড়িতে কাজ করে আসছে। ঘটনার দিন গত (২৩ সেপ্টেম্বর) সবুজ তাদের একটি ঘাসের জমিতে আগাছা পরিষ্কার করার জন্য হামেদকে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় জমির আগাছা পরিষ্কার করার সময় দুজনের মাঝে কথা কাটাকাটির বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়, এক পর্যায়ে সবুজের মাথায় কোদাল দিয়ে আঘাত করে হামেদ।
এসময় সবুজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তিতে মৃতদেহ লুকানোর জন্য হামেদ প্রথমে ঘাস দিয়ে মরদেহটি ঢেকে রাখে, এরপর মরদেহটি পাশের একটি পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখে। এরপর বাড়ী থেকে একটি হাসুয়া এনে মরদেহটি তিন টুকরো করে উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রামের একটি ধান খেতের মাঝখানে ডোবায় বোস্তায় করে পানির নিচে মরদেহের দুটো টুকরো পুতে রাখে এবং মাথাটি পাশে একটি বরেন্দ্র গভীর নলকুপের পাইপের ভিতরে রেখে দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, রিমান্ডে প্রাথমিক চিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে আটককৃত আব্দুর হামেদ। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঘটনা স্থল থেকে মস্তকসহ হত্যায় ব্যবহৃত হাসুয়া ও কোঁদাল উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এ ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিহতের ছোট ভাই সাদেক হাসান সজিব বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামী করে ফুলবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই রাতেই ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
আটককৃতদের মধ্যে মামলার ৬ নাম্বার আসামি উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের গ্রামের মৃত আব্দুর জব্বারের ছেলে মো. আব্দুর হামেদ (৫২) কে তিন দিনের রিমান্ডে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (১৮ অক্টোবর) ওই আসামীর দেয়া তথ্য মোতাবেক ঘটনা স্থলের একটি গভির নলকুপের পাইপের ভেতর থেকে মরদেহের বিচ্ছিন্ন মস্তকটি উদ্ধার করে তার দেওয়া তথ্য মোতাবে ক যে দেশীয় অস্ত্র দ্বারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন আসামের বাড়ি থেকে কোদাল হাসুয়া উদ্ধার হয়েছে।