ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ডিগ্রি কলেজে কর্তৃপক্ষের অগোচরে ৩১ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করার এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। পরিক্ষা শুরুর মাত্র দুদিন আগে শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়, যা নিয়ে কলেজ জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কলেজের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এই ৩১ জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের কাজটি গোপনে সম্পন্ন করেন ওই শাখারই শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন মুকুুল। তবে তাদের ফরম পূরণের কোনো তথ্যই কলেজের রেকর্ডে নেই। এতে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়লে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে মানবিক দিক বিবেচনা করে অনলাইন থেকে প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে দিলে তারা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়।
কলেজের কর্তৃপক্ষ জানায়, “এ বছর বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ মিলিয়ে ৩২৩ জন এবং কারিগরি শাখা (বিএমটি) থেকে ১৪৮ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা হয়েছে, যাদের সব তথ্য কলেজে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু ৩১ জন পরীক্ষার্থীর বিষয়টি জানানো হয়নি ফলে রহস্য তৈরি হয়েছে।” এ বিষয়ে শনিবার সকালে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের এক জরুরি সভা ওই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া সম্পূর্ণ অর্থ কলেজ ফান্ডে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক বলেন, ওই শিক্ষক যে কাজটা করেছে, তা আমাকে জীবিত রেখেই মেরে ফেলার সমান। কলেজ ফান্ডে টাকা জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, না দিলে আগামী শনিবার পুনরায় মিটিং ডেকে বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন মুকুল বলেন, “ফরম পূরণের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওই শিক্ষার্থীরা পরিক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অধ্যক্ষের কাছে সুযোগ চেয়েছিল। কিন্তু তিনি দেন নাই। পরে ছাত্ররা নিজেরাই বোর্ডে গিয়ে ফরম ফিলাপ করেছে। আমি ফরম ফিলাপের টাকা নেয়নি। তবে ছাত্রদের কলেজের অন্যান্য পাওনাদির টাকা ফিরত দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়াটাই যেন আমার অপরাধ। শোকজের কোন কাগজ আমি পায়নি।