মৌলভীবাজারে নবীজী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় সাহাবিদের নিয়ে কটূক্তি করে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে বিষাক্ত ছুরি চালানো সেই নারী আইনজীবী উমায়রা ইসলামের বিরুদ্ধে অবশেষে ফুঁসে উঠেছে ঈমানদার জনতা।
সারা দেশের মতো মৌলভীবাজারেও ইসলাম বিদ্বেষের বিষ ছড়াতে চেয়েছিল এক নারী নাস্তিক, যিনি নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে পরিচিত করলেও তার আচরণ ছিল একেবারেই উচ্ছৃঙ্খল, উগ্র, ধর্মহীনতা-কেন্দ্রিক ও উগ্র-ধর্মনিন্দাবাদী।
উমায়রার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, সে ফেসবুকে নিয়মিত ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.) এবং সাহাবি হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গ করে, অপমানজনক ভাষায় স্ট্যাটাস দেয় এবং আলেম সমাজ ও মাদ্রাসা শিক্ষাকে হেয় করে।
তার স্ট্যাটাসগুলো শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং সচেতনভাবে মুসলমানদের উত্তেজিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে পোস্ট করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় মুসলমানদের। এ যেন শাহবাগি মতাদর্শের আরেক কুলাঙ্গার রূপ, যার মুখে আইন পেশার মুখোশ, অথচ অন্তরে ইসলাম বিদ্বেষের ঘৃণিত আগুন।
শনিবার রাতে মৌলভীবাজার শহরের ক্লাব রোডে তার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। তার মোবাইল, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে থাকা কনটেন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে সাইবার সুরক্ষা আইনের আওতায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশে জেলার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঢল নামে। মিছিল-সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। শ্লোগানে-শ্লোগানে মুখরিত হয় মৌলভীবাজার শহর।
স্লোগান উঠেছে—
১| “সাহাবির অপমান, মুসলমানের রক্তে আগুন!”
২|”উমায়রা কুলাঙ্গার, ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণিত চর!”
৩| “ধর্মদ্রোহীর স্থান কারাগার নয়, রাষ্ট্রীয় বিচারের কাঠগড়ায়!”
৪| “ব্লাসফেমি আইন চাই—ঈমান রক্ষায়, দেশ রক্ষায়!”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আহমদ বেলাল এবং সঞ্চালনা করেন মাওলানা হাফিজ আলাউর রহমান টিপু। বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজারের খ্যাতনামা আলেমগণ, মাদ্রাসার শিক্ষক, ইমাম, রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্বশীল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ। সবাই একবাক্যে বলেন—
“উমায়রা ইসলাম কোনো ব্যক্তির নাম নয়, এটি ইসলাম বিদ্বেষের প্রতীক। আর এই প্রতীকের পতন সময়ের দাবি।”
সমাবেশ শেষে শহরে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে ফিরে আসে। বিক্ষোভে অংশ নেয় নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ। এতে মৌলভীবাজার এক অনন্য নজির স্থাপন করল— যেখানে ধর্মকে অপমান করলে কতটা ক্ষোভে আগুন হয়ে উঠতে পারে একটি শহর, তা পুরো দেশ দেখল।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মত জঘন্য অপরাধকে যারা ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ বলে আড়াল করতে চায়, তাদের উদ্দেশে একজন বক্তা বলেন—
“মতপ্রকাশের নামে যদি আমার ঈমান কাটা হয়, তবে সে অধিকারকে আমি পদদলিত করবো। এ দেশ মুসলমানদের দেশ, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ঈমান কাটা চলবে না।”
এই পুরো ঘটনায় মৌলভীবাজার আবারও প্রমাণ করল, এখানকার ঈমানদার মানুষ কখনো ইসলাম বিদ্বেষ সহ্য করে না। যারা ধর্ম অবমাননাকে অভ্যাসে পরিণত করেছে— চেতনাবাজ, শাহবাগি, বা তথাকথিত ‘প্রগতিশীল’ নামধারী ইসলামবিদ্বেষীরা— তাদের প্রতি একটি বার্তা পৌঁছে গেছে মৌলভীবাজার থেকে:
“তোমরা যতই লেখো, যতই কটাক্ষ করো— আমরা এক নবীর উম্মত, সাহাবিদের সম্মানে জীবন দিতে প্রস্তুত!”
এবার শুধু মৌলভীবাজার নয়, গোটা বাংলাদেশ চায় — উমায়রা ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। ইসলাম বিদ্বেষীদের মুখোশ উন্মোচিত হোক। ব্লাসফেমি আইনের বাস্তবায়ন হোক— যেন আর কোনো কুলাঙ্গার সাহস না পায় নবীজী (সা.) ও সাহাবিদের নিয়ে ব্যঙ্গ করতে।
বি.দ্রঃ রিপোর্টটি জনস্বার্থে ধর্মীয় সহনশীলতা রক্ষার্থে প্রকাশিত। আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়ার আহ্বান নয়, বরং ইসলাম রক্ষায় সাংবিধানিকভাবে কঠোর আইন বাস্তবায়নের দাবি।