তন্দুরি পনির, তন্দুরি চিকেন, তন্দুরি রুটি, তন্দুরি কাবাব তো খেয়েছেন, এবার খেয়ে দেখুন “তন্দুরী চা”।
বেনাপোল বাজরে এখন নুতন ক্রেজ সৃষ্টি হয়েছে সেটি হচ্ছে ‘তন্দুরী চা’! ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে এই চায়ের কদর রয়েছে বেশ জোরে-শোরে, পরে আমাদের দেশে ঢাকা সহ অন্যান্য জেলা শহর গুলোয় সীমিত আকারে প্রচলণ চলছে,তেমন জনপ্রিয়তার সাড়া মেলেনি,তবে যশোর জেলার শার্শা উপজেলাধীন বেনাপোল বন্দরের বাজার এলাকায় গত কয়েকদিন হলো আন্তর্জাতিক মানের সাথে তন্দুরী চায়ের স্বাদ সমুন্নত রেখে “তন্দুরী চা” এর স্টল খুলেছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার(১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বেনাপোল বাজারস্থ পুকুরপাড় জামে-মসজিদ সংলগ্ন এ “তন্দুরী চা” এর দোকানে গিয়ে এর কৌতুহলটা জানলাম। এর উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পুনে অবস্থিত ‘চায় লা’ নামক একটা দোকানের তন্দুরি চা বিখ্যাত হওয়ার পর সেখানে দেশব্যাপী বিভিন্ন দোকানে তন্দুরি চা বিক্রি শুরু হয়। চা তৈরীর প্রনালী সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তন্দুরি চা” তৈরি করতে হলে ফাঁকা মাটির ভাঁড় গরম তন্দুরের মধ্যে দিয়ে গরম করে অর্ধেক তৈরি চা ওই ভাঁড়ের মধ্যে ঢেলে দিলেই তৈরি হয়ে যায় তন্দুরি চা। তন্দুরি চায়ের এই আইডিয়া ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠায় আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী এই আইডিয়াটা গ্রহণ করি এবং “তন্দুরী চা” এর সুস্বাদু স্বাদ অত্র এলাকার মানুষের মাঝে পৌছে দিতে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। “আশা করি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত “তন্দুরী চা” আমাদের দেশে বেনাপোল সহ দেশব্যাপি জনপ্রিয়তা পাবে বলে আমি মনে করি”।
“তন্দুরী চা” এর স্বাদ নিতে ঐ সময় চা স্টলে এসেছিলেন শার্শা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান। আমরা তার সাথে কথা বলি এবং এই চায়ের স্বাদ সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ভাবে উৎপত্তি “তন্দুরী চা” দেশে-বিদেশে বেশ সমাদৃত। সাধারণ চায়ের তুলনায় এর স্বাদ এবং ঘ্রাণ অতুলনীয়। ব্যাস্ত নগরী বেনাপোল বন্দরে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,সব কিছুতে যুবকেরা এগিয়ে আসুক এবং নিজেদেরকে চাকুরী মুখী না করে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে উঠে নিজেদের জীবন নিজেরাই পরিবর্তন করুক,আমি ওদের সাফল্য কামনা করি।
চা স্টলে বসা “তন্দুরী চা” এর স্বাদ পানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ‘প্রেসক্লাব বেনাপোল” এর সাংবাদিক ফারুখ হোসেন। আমরা তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, “মুলত সংক্ষেপে বলা চলে, এটি চায়ের উপকরণে চা, তবে চা বানিয়ে মাটির ঘড়া পুড়িয়ে এবং সেই ঘড়াতে চা ঢেলে ফেলা হয়, ফলে চাতে একটা আলাদা পড়ানো ফ্লেভার আসে এবং পানে আলাদা একটা তৃপ্তি পাওয়া যায়”।
চা স্টলে আরও একজনকে পাওয়া গেল,তিনি হচ্ছেন ” একতা প্রেসক্লাব বেনাপোল’ এর সন্মানিত সাধারণ সম্পাদক সুমন হুসাইন। আমরা “তন্দুরী চা” সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,তন্দুরে পোড়ানো চা অল্পসময়েই দেশে চা প্রেমীদের মন কেড়ে নিয়েছে এই চা, দুধ চায়ের সঙ্গে হালকা একটু ধোঁয়ার ঘ্রাণ, গ্রামে খড়ির চুলায় রাঁধলে খাবারে যেমন একটা সুন্দর ঘ্রাণ পাওয়া যায়, এই তন্দুরি চাও খেতে কিছুটা সেরকম, আবার মশলা চা প্রেমীদের ক্ষেত্রেও এ চায়ের স্বাদ মন কেড়ে নেবে নিঃসন্দেহে। আন্তর্জাতিক ভাবে প্রসিদ্ধ “তন্দুরী চা” বানিজ্যিক ভাবে আমাদের দেশে পরিচিতি পাক, পাশাপাশি বেনাপোলের এ সকল কৃতি সন্তানদের এমন মহতি উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানায়।