ফ্যাসিবাদ, দূর্নীতিবাজ, হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জীত যার হাত, সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রশ্রয়দাতা, জনগণের রক্ত দিয়ে অর্জিত সম্পদ লোপাটকারিদের প্রধান, বিনা বিচারে মানুষকে নির্বিচারে গুলি, হত্যা, গুম, খুনের নির্দেশদাতা, বিনাভোটে রাতের আধারে ব্যালট বাক্স ভরার পথ-প্রদর্শক, অ-গণতান্ত্রিক, অবৈধ, অনির্বাচিত সরকারে প্রধান, জোড় করে ক্ষমতা দখলকারি, নিজের স্বার্থে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের নির্দেশদাতা, আয়না ঘড়ের মালিক, হাজারো মায়ের বুক খালি করে দেওয়ার নির্দেশদাতা, আরো না জানি কয়েক লক্ষ অপরাধী তৈরি করার মাষ্টার মাইন্ড, আওয়ামীলী বাহীনি ও স্বৈরাচারদের প্রধান শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনা ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করে বর্তমানে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তিনি ভারতের ঠিক কোন জায়গায় অবস্থান করছেন, অথবা তিনি সেখানে থাকবেন কিনা অথবা তৃতীয় কোনো দেশে যাবেন কিনা, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়।
কিন্তু ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সহায়তায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ভারতের পরীক্ষিত বন্ধু। টানা প্রায় ১৬ বছর অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অবৈধ সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছিলো। তাই শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশত্যাগ ভারতের নরেন্দ্রমোদীর জন্য বিশেষভাবে লজ্জা জনক ও বটে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগ ২০২১ সালের আফগানিস্তান পরিস্থিতি ও ২০২২ সালের শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়। তখন গণ-আন্দোলনের মুখে আফগানিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশত্যাগ করেছিলেন। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিভিন্ন কারণে সম্পূর্ণ আলাদা।
যার মূল কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ সেনাবাহীনি প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অত্যান্ত তীখনো বুদ্ধি শক্তি প্রয়োগ করে। সাধারণ ছাত্র-জনতা ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে কিভাবে আগামীতে সুন্দরভাবে দেশ পরিচালিত হবে তার একটি দিক নির্দেশনা তৈরির ব্যাপারে জোড়ালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যেই কথা দিয়েছেন যে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে, সাধারণ জনগণের জান-মাল নিরাপত্তার সম্পূর্ণ দ্বায়িত্ব গ্রহন করবেন। দেশের জনগণ যেন বাংলাদেশ সেনাবাহীনির ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা রাখে সে ব্যাপারে সেনা প্রধান অনুরোধ করেছেন।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনাটি পুরো বাঙালি জাতি আনন্দের সাথে উপভোগ করেছে। যেন মনে হয়েছিলো আজ ১৬ কোটি বাঙালি রাস্তায় নেমে এসে আনন্দ মিছিল করছে। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা অর্জনের যে আনন্দ তাঁর চাইতে এই আনন্দ আরো বেশি উৎফুল্ল ও শান্তির ছিলো। ঢাকার অলিতে গলিতে, রাজপথে, মহাসড়কে, ফ্লাইওভার ব্রীজের ওপরে, বাড়ির ছাদেও লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিজয়ের হাসিতে হাসতে দেখা গেছে।
আজ এই আনন্দ মিছিলে কোথাও আওয়ামীলগের কোন সাঙ্গ-পাঙ্গকে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পরে দেশে তেমন কোন বিশৃংখলা ঘটেনি তবে মানুষের ক্ষোভের অভিপ্রকাশ ঘটেছে এবং প্রতিনিয়তই দেশ পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে শুরু করেছে।