1. admin@dailyshadhinbarta.com : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
নিরাপদ ও বসবাস যোগ্য ঢাকা গড়তে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার ঘুষ ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিনাজপুরে ২১০ রাউন্ড গুলিসহ ১৭টি আগেন অস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে সকল কর্মস্থল থেকে ভারতীয় নাগরিকদের প্রত্যাহারের দাবি জবিতে শত, সাহসি ও যোগ্য ভিসি চান শিক্ষরা সাতক্ষীরায় মিথ্যা সংবাদ ও মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু বগুড়াতে ফ্রিজে হাতপা বাধা অবস্থায় গৃহবধুর লাশ উদ্ধার পাবনায় চুরি হওয়া ট্রাক নাটর থেকে উদ্ধার গাজীপুরে বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী: গ্রেফতার ও হচ্ছেন অনেকে ভার‌তে মুখ‌্যমন্ত্রীর সমুচা খে‌য়ে ফেলা নি‌য়ে লঙ্কাকান্ড: তদন্ত গি‌য়ে গড়া‌লো সিআইডি পর্যন্ত কমলনগর প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ সদস্যের অনাস্থা: আহবায়ক কমিটি গঠন রাঙাবালি উপজেলায় বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত রামগতিতে ইউপি সদস্যের দোকানঘর দখলের চেষ্টা, ৬ নারী আহত

কমলা চাষে যুবকের ভাগ্য বদল

মোঃ মারুফ হোসেন, জেলা (যশোর) প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

যশোরের শার্শায় রামরঙ্গন কমলা চাষ করে স্বপ্নবাজ যুবকের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। যশোরের মাটিতে সুস্বাদু রামরঙ্গন কমলা লেবু তিনিই প্রথম চাষ করেছেন বলে দাবি তার। সুমিষ্ট ফল রামরঙ্গন লেবু চাষের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে শার্শায়। শার্শার মাটিতে উৎপাদিত রামরঙ্গন কমলা লেবু চীনসহ অন্য যে কোনো দেশ থেকে আমদানিকৃত রামরঙ্গন লেবুর চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু।

বিভিন্ন জাতের আম, কুল, আঙ্গুর, কমলা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি, মালটা ও লিচু চাষের পর এবার রামরঙ্গন কমলা চাষে সফল হল শার্শার এক যুবক। নার্সারী ব্যবসার পাশাপাশি শখের বসে রামরঙ্গন কমলা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন যশোরের শার্শা  উপজেলার পানবুড়িয়া গ্রামের কৃষক অহিদুজ্জামান।  বুক সমান গাছ। কোনোটা আবার ৫/৬ ফুট ছাঁড়িয়েছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে নজরকাড়া ছোট ছোট হলুদ রঙের রামরঙ্গন কমলা লেবু। এরই মধ্যে অনেক ফলেই পাকা রং ধরেছে। ফলটির নাম ‘রামরঙ্গন’ এটা কমলার একটি ভ্যারাইটি জাত।

এই জাতের কমলা চাষে সুবিধা হচ্ছে পরিপক্ব হওয়ার পরও এটা গাছ থেকে ঝরে পড়ে না। পরিপক্কের পরও অন্তত ফলটি এক মাস গাছে রাখা যায়। ভারত ও চীন দেশে ব্যাপক চাষ হয় ফলটির। তবে যশোর জেলার শার্শা উপজেলার পানবুড়িয়া গ্রামের স্বপ্নবাজ যুবক অহিদুজ্জামানের বাগানে এই ফলটির চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।রামরঙ্গন কমলা চাষ দেখতে আশে পাশের লোক সহ দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। দেখছেন, কেউবা আবার তুলছেন ছবি।

রামরঙ্গন কমলাচাষি অহিদুজ্জামান জানান, তিনি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২ বিঘা জমি ১০ বছর মেয়াদে বর্গা নিয়ে ১৯৬টি রামরঙ্গন চায়না কমলার চারা রোপন করেন। সে সময় তিনি সঠিক জানতেন ও না, এই গাছে কেমন ফল হবে। প্রথম বছর কিছু ফল আসে। সে ফল খুব সুস্বাদু হওয়ায় তাতে কলম বাঁধি। পরে দুই বিঘা জমিতে ওই চারা লাগালে দ্বিতীয় বছর গাছে ফল ভরে গেছে। প্রথম বছর তার ফল বিক্রি হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

তবে এ বছর বাগানের ফল ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। ফলে অহিদুজ্জামান আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, দুই বিঘা জমিতে রামরঙ্গন কমলার চাষ করতে প্রথম বছর ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। বছরের যে কোন সময় চারা রোপন করা যায়। শুষ্ক মৌসুম হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ফল হারভেস্ট করতে হবে। সামান্য কিছু পরিচর্যা করলেই এ চাষে সাফল্য আসে।

রামরঙ্গন কমলা চাষে পোকামাকড়ের আক্রমন ও কম। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে এক মৌসুমে দেড়মন থেকে দুই মন রামরঙ্গন কমলা পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। আগামী মৌসুমে প্রতিটি গাছে দুই মন কমলা পাওয়ার আশা অহিদুজ্জামানের। প্রায় প্রতিদিন দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে এই বাগান চত্বর। তখন মনটা খুশিতে ভরে যায়। তিনি জানান, সর্বপ্রথম ২০২২ সালে টেলিভিশনে একটা প্রতিবেদন দেখি। দেশের মাটিতে বিদেশি ফলের চাষ হচ্ছে।

প্রতিবেদনটি দেখার পরে রামরঙ্গন কমলা চাষের আগ্রহ জন্মায়। নাভারন সাতক্ষীরা মহাসড়কের কুচেমোড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে ‘জিসান নার্সারীর’ মালিক অহিদুজ্জামান বলেন, আগে আম, পেয়ারা, মাল্টা, কুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছি। তারপর বর্গা নেওয়া ওই জমিটি রামরঙ্গন কমলা চাষের উপযোগি করে মাটি প্রস্তুত করি। বাগান ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ রঙে থোকায় থোকায় রামরঙ্গন কমলা লেবুতে ছেয়ে গেছে পুরো বাগান। যা দেখে যে কারোরই মন ভরে উঠবে।

যদি কমলার আবাদ করা হয় তাহলে শুধু এই অঞ্চলের উৎপাদিত কমলা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে। তাই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে দেশের বাইরে না গিয়ে তরুণ, বেকার এবং শিক্ষিত যুবকদের রামরঙ্গন কমলার বাগান করার পরামর্শ দেন অহিদুজ্জামান। তিনি আরো বলেন, “রামরঙ্গন কমলার চারা গুলো মূলত ২ বছরের মধ্য ফলন দেয় যা ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। দুই বিঘা  জমিতে ১৯৬টি চারা থেকে শুরু হওয়া শখের বসে গড়ে তোলা এই বাগান, এখন চার বিঘা জায়গায় রুপ নিয়েছে।

তার “জিসান নার্সারী” মূলত কৃষি বিপ্লব করায় মূখ্য উদ্দেশ্য বলে জানান এই নতুন কমলাচাষী। নার্সারী ব্যবসার মাধ্যমে রামরঙ্গন কমলার চারা তৈরি করে বিক্রি করছেন। প্রতিটি চারা তিনি বিক্রি করছেন ৬০ টাকা দরে। এখান থেকে চারা সংগ্রহ করে অনেকেই বাগান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। ঝিকরগাছার ফলের ব্যাপারি আব্দুল মজিদ বলেন, দেশে চায়না জাতের রামরঙ্গন কমলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই কমলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে প্রায় ফলের দামের সমান ভ্যাট ও খরচ হয়ে যায়। দেশি এই ফলগুলো একশো টাকা কেজি দরেও ভালভাবে বিক্রি করতে পারি।

তাতে ভালো লাভ ও হয়। শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, শার্শা উপজেলার আবহাওয়া ও মাটি বিভিন্ন ফল চাষের জন্য উপযোগী। দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম, কুল, আঙ্গুর, কমলা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি, মাল্টা, লিচু ও চায়না লেবু (কমলা) চাষের জন্য এই মাটি উপযোগী। চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, বেলে-দোআঁশ মাটিতে জুন-জুলাই মাসে চারা লাগালে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে তাতে ফল পাওয়া যাবে। তবে ব্যাগিং চারা যে কোন সময় সেচ দিয়ে লাগানো সম্ভব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2020-2022 Daily Shadhin Barta