এ আই রবি, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় করোনা সংকট মোকাবেলায় ত্রাণের চাল বিতরণ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় সমাবেশ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন প্রতিপক্ষরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের হরিরামপুর এলাকার রুপপুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কিছু লোকজন ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে লোকজনকে ডেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাবেশের আয়োজন করে।
এ খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। তিনি লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করে বলেন পর্যায়ক্রমে সবাইকে ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হবে। আপনারা ধৈর্য্য ধরুন।
এ সময় কিছু লোক চেয়ারম্যানের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষরা চেয়ারম্যানের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন।
খবর পেতে মুহুর্তেই ঘটনাস্থলে ছুটেজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ অ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলপনা ইয়াসমিন, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, ও বাঘা থানার পুলিশ। এ সময় সবাই বিক্ষোভকারীদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সকলকে শান্ত করা হয়।
এ সময় মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার, পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে প্রথম পর্যায়ে ৫০০ পরিবার ও দ্বিতীয় পর্যায়ে
২৫০টি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে ৭০০ পরিবারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। সেগুলো বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য সবাইকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হবে।
ত্রাণ না পাওয়া রনি বেগম, রাহেলা, আজদার, আরমান লিমা, আফরোজা, সরেজান, লালন, ছপেনা, জারমান ও লালু জানান, প্রায় সাড়ে ৩ সপ্তাহ থেকে করোনা ভাইরাসের কারণে সকল কাজ বন্ধ থাকায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি।
ফলে অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছি। এ কারণে অতিদ্রুত খাদ্য সহায়তার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু, বলেন আমরা এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোকজনকে রাস্তায় নামিয়েছেন, এমন ঘটনা জানার পর আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।
সবাই ত্রাণ পায়নি এ কথা সত্য নয়। তবে যারা পায়নি তাদের পরবর্তীতে খাদ্যসামগ্রী দিতে চেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, ইতিমধ্যে রিকশাচালক, হোটেল শ্রমিক, ইমারত শ্রমিক, চায়ের দোকানদার ও ভিক্ষুকদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। বাকিদের অতি দ্রুত খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।
তবে একটি মহল বিশেষ উদ্দেশ্যে সামাজিক দূরত্ব না মেনে কিছু দিনমুজুরদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। এটি মোটেও কাম্য নয়। আমি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। আগামিকাল অথবা পরশু সেই তালিকা অনুযায়ী তাদের খাদ্যসামগ্রী দেয়া হবে।