ভাষা সৈনিক রেজাউল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী, প্রেসিডিয়াম মেম্বার কৃষকবন্ধু আবদুল মান্নান আজাদ, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান নাঈমুল ইসলাম চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিপুন মিস্ত্রী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ রানা প্রমুখ।
ভাষা সংরক্ষণ ও চর্চা মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২০শে জানুয়ারী সকাল আনুমানিক ৬টার সময় মৃত্যুবরণ করেন। বিকেল ৫ টায় শ্যামলী জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজীমপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ‘বায়ান্নর জীবন্ত কিংবদন্তি ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম’ গ্রন্থে মোমিন মেহেদী লিখেছেন, ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম ১৯৩৭ সালের ৪ এপ্রিল বগুড়া জেলাধীন সারিয়াকান্দা থানার নারচী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ মোজাহেদ উদ্দীন তরফদার এবং মাতার নাম আকলিমা খাতুন।
১৯৫২ সালে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুলের ছাত্র থাকাকালীন তিনি একুশের আন্দোলনের সাথে জড়িত হন এবং নানা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। এই কর্মসূচীতে তিনি নিজের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন করতে সামর্থ হন। যে অর্জনের হাত ধরে সারা জীবন নিরন্তর দেশপ্রেমিক-ভাষা প্রেমিক আর মানব প্রেমিক হিসেবে বেয়ে চলেছেন জীবনের তরী।
ইতিহাস সম্মৃদ্ধতায় অগ্রসর হতে হতে জানায়, মোহাম্মদ মোদাব্বের (বাকবান ভাই) এর সংগঠিত মুকুল ফৌজে আজিমপুর মুকুল ফৌজ-এর প্রথম সেনা এবং পরবর্তীকালে অগ্রণী সেনা ছিলেন। ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্যাম্পে তিনি আদর্শ মুকুল (শ্রেষ্ঠ মুকুল) হিসেবে পদকপ্রাপ্ত হন এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী’র কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন।
১৯৫২ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। ২১শে ফেব্রুয়ারি হরতাল পালন করা হবে। এই খবরটি অতি সহজেই পৌঁছে যায় কিশোর রেজাউল করিমের কাছে। তখন তিনি থাকতেন আজিমপুর সরকারি কলোনিতে। ২১শে ফেব্রুয়ারিতে সমাবেশ ও গুলি বর্ষণের স্থান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল আজিমপুর সংলগ্ন।
কাজেই আজিমপুরের সংগ্রামী ছাত্র-জনতা বিশেষ করে আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দারা একুশের আন্দোলনে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এরপর তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৩ সালে বদলি বিসিআইসি এর অধীনে ঘোড়াশাল ও আশুগঞ্জ সার কারখানায় ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকুরি করেন।
অতঃপর ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন ১৯৯৭ সালে। ১৯৬৫ সালে তিনি বেতার ও টেলিভিশন-এর জনপ্রিয় নজরুল গীতির কণ্ঠশিল্পী সেলিমা করিম-এর সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। কর্মজীবন চাকুরির পাশাপাশি তিনি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়েও নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন।
তিনি আশুগঞ্জে অবস্থিত জিয়া সার কারখানার কলেজ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি সিলেট জেলার ছাতকে অবস্থিত ছাতক কলেজ এবং ফেঞ্জুগঞ্জে অবস্থিত ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজের কার্যনির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বৃহত্তম বগুড়া সমিতির আজীবন সদস্য এবং ভাষা সংস্কৃতি চর্চা মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি