মোঃ আরিফ হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জ উপজেলায় ৪ নং ইছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ শহীদ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে রামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার গভীর শোক প্রকাশ। রোববার ২১জুন ভোর রাতে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খবর নিয়ে জানা যায়, চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি জ্বরে ভুগছিলেন। তার অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাতে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
রবিবার ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, আজ সকালে তার পরিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এমনকি ইউপি চেয়াম্যানের মৃত্যুতে ইউ এন ও‘র ওয়ালে দুঃখজনক স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মুনতাসির জাহান এর ওয়াল থেকে নেয়া।
“সম্ভবত এটাই তার সাথে আমার শেষ দেখা এবং শেষ ছবি।কোনোমতেই মানতে পারছিনা।চেয়ারম্যান সাহেব, ভাই আমার, কেনো এতো তাড়াতাড়ি চলে গেলেন? আপনার এখনো অনেক কাজ করা বাকি আছে। আপনার করা সে ইজিপিপির নতুন তিনমোহনার মাটির রাস্তায় না আমরা অনেক গাছ লাগাতে চেয়েছিলাম!

করোনার প্রথম দিকে বিকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত পুরো ইউনিয়নের প্রত্যেকটি রাস্তায় আমাকে ঘুরিয়েছেন।বলছিলেন, স্যার পোলাপাইন কথা শুনেনা,
শুধু আড্ডা দেয়, আপনি একবার গাড়িটা নিয়ে ঘুর্ণা দিলেও একটু ভয় পাবে, এগুলারে নাইলে কন্ট্রোল করা মুশকিল হয়ে যাইতেছে।প্রায় দিনই আপনি আমাকে ফোন দিতেন,
কোনো কারনে না ধরতে পারলে পরক্ষণেই আবার বলতেন, স্যার, আপনি কি আমার উপর রাগ করছেন? ফোন ধরেননাই যে!! সর্বশেষ গত চারদিন আগে আমাকে পরপর দুবার ফোন দিয়েছিলেন, পরে ব্যাক করাতেই আবার সেই আগের কথা।স্যার, ভালো আছেননি?? জানি, ভালো থাকার কথা না কোনোমতেই।
চিন্তা কইরেননা স্যার, আমরা আছি আপনার সাথে।কই আছেন আপনি? কথাতো রাখেননি চেয়ারম্যান সাহেব!! আপনার ইউনিয়নে একটা স্কুলে মেয়েদের জন্য একটা নামাজরুম কাম কমনরুম করার কথা ছিলো।
বলছিলাম আল্লাহর রহমতে করোনাটা গেলেই আমরা সে কাজে হাত দিবো।রুমটা মেয়েদের উপযোগী করে সুন্দর করে সাজিয়ে দিবো।
কোথায় গেলো সে প্ল্যান? আমার খুব স্বপ্ন ছিলো স্কুলের সব বাচ্চাদের হাতে লালসবুজ ছাতা ধরিয়ে দেশাত্মবোধে জাগ্রত করবো নতুন প্রজন্মটাকে। আপনি সে স্বপ্নটা পূরণ করিয়েছেন। যখনই ডেকেছি তখনই আপনাকে পেয়েছি।
এতো তাড়াতাড়ি সাড়া না দিয়ে, না বলে কয়ে চিরদিনের মতো হারিয়ে গেলেন ?? ছবিটার দিকে তাকাতে পারছিনা ভাই, চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। এভাবেই ওপারে পাড়ি জমাতে হবে সবাইকে।দুদিন আগে আর পরে।
হে আল্লাহ, রহম করুন, দয়া করুন, তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
আপনার পরিবারকে মহান আল্লাহতায়ালা হেফাজত করুন। আমিন।