বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় তাঁর দলের ৪২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহত প্রত্যেকের নাম, পরিচয় ও ঠিকানা তাঁরা সংগ্রহ করেছেন। এই তালিকা বিএনপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় সারা দেশে ৮৭৫ জন শহীদ হন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ হওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা-রাজনীতির মানুষের মধ্যে একটা বড় অংশ যে বিএনপির নেতা-কর্মী, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং তা তাঁদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল। তিনি আরো বলেন, এরা সবাই স্বৈারচার ও ফ্যাসিবাদি সরকারকে বিদায়ে ছাত্র-জনতার সাথে একাত্ততা প্রকাশ করে রাজপথে নেমে ২য় বারের এই দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস। গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যথাতুর মায়ের ডাক। স্বামী হারানো বেদনাবিধুর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ। পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার। আর কারাগারে বন্দী ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাঁদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে, প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপির ৪২২ জন শহীদ হন। এর আগে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির ১ হাজার ৫৫১ জন শহীদ হন। গুম হন ৪২৩ জন। আর সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে এই সময়ে গুমের সংখ্যা প্রায় ৭০০। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা হয়। আসামি ৬০ লাখ। এসব কেবল বিএনপির ত্যাগের পরিসংখ্যানই নয়, বরং বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে দলটির অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, সালাউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।