দিনাজপুর শহর থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটি চার বছর আগে সম্প্রসারণ করা হয়। ৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত হওয়া ১০৬ কিলোমিটারের সড়কটিকে ঘিরে ওই পথে যাতায়াতকারীরা স্বপ্ন দেখতে থাকেন। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পর থেকেই দীর্ঘ এ পথের অর্ধেকের বেশি অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ঢেউ খেলানো রাস্তার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সম্প্রসারিত সড়কটি এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তা বানানোর আগে রোলিং না করাসহ বিভিন্ন নির্মাণ ত্রুটি ও অনিয়মের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও দায় নিতে নারাজ সড়ক বিভাগ। তারা এমন অবস্থার জন্য ‘ওভার লোডেড’ গাড়ির চলাচলকে সামনে আনছেন। বলছেন, ঠিকাদারের মাধ্যমে সংস্কার করে অবস্থার উন্নতি করা হবে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আঞ্চলিক এই সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুর শহর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়া হয় ৮৮২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে আটটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে।
৯টি গুচ্ছের মাধ্যমে চলা সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পর থেকে রাস্তার অনেক অংশ দেবে যেতে থাকে। দৃশ্যমান হয় ঢেউ খেলানো রাস্তা। দিন দিন তা চলাচলের অনুপযোগী হতে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ সড়কটি ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জেলার বিরামপুর, হিলি, ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী মানুষদের এ পথ দিয়ে দিনাজপুর সদরে আসা-যাওয়া করতে হয়। এই সড়ক দিয়েই দেশের একমাত্র মধ্যপাড়া কঠিন শীলা খনি, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এবং কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাতায়াত করতে হয়।
এছাড়া ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়গামী বিপুলসংখ্যক যানবাহন এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু ব্যস্ততম এ সড়কটি দিয়ে এখন নির্বিঘ্নে যাতায়াত করা যাচ্ছে না।