1. info@dailyshadhinbarta.com.bd : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন

ইউনূস-তারেক বৈঠক হবে ‘ওয়ান টু ওয়ান’, আশাবাদী দুই পক্ষই

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক বৈঠক হতে যাচ্ছে শুক্রবার।

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডরচেস্টার হোটেলে বৈঠকটি হবে রুদ্ধদ্বার। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক। এ কারণে বৈঠকের এজেন্ডা নিয়ে জনমনে আরও বেশি চাঞ্চল্য ও উৎসাহ তৈরি হয়েছে।

তবে দুই পক্ষের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং ইতোমধ্যে দুই তরফ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনার প্রধান বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনা। এজন্য সরকার এপ্রিল থেকে সরে এলে, বিএনপিও ডিসেম্বর থেকে সরে আসবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করাই আলোচনা-সমঝোতার প্রধান বিষয় হয়ে দেখা দিতে পারে।

এছাড়া চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, বিচার, জুলাই চার্টারসহ (জুলাই সনদ) নানা ইস্যু একে একে আলোচনায় উঠে আসবে। এমনকি নির্বাচিত পরবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতীয় সংসদে অন্তর্বর্তী সরকারের সব কর্মকাণ্ড অনুমোদন দেওয়াসহ এ সংক্রান্ত অনেক কিছু আলোচনায় আসবে বলে বিশ্লেষকদের অনেকে অভিমত দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা মনে করেন, দ্বিপাক্ষিক এ ঐতিহাসিক আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে চলমান রাজনীতিসহ অনেক কিছু বিপদগামী হতে পারে। তবে কেউ কেউ এমনও বলেছেন, দেশের সার্বিক স্বার্থে এ বৈঠকের সার্বিক আলোচনা, মতবিরোধ ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা ঠিক হবে না। বরং সেটি পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত হতে পারে। কিন্তু আগে প্রকাশ করা হলে নানামুখী ষড়যন্ত্র বিস্তার লাভ করবে এবং দেশ ও জনস্বার্থের অনেক ভালো উদ্যোগও ভেস্তে যেতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘বৈঠকের ফলাফল ইতিবাচকই হবে বলে বিশ্বাস করি। আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় দুই পক্ষ পৌঁছাবে বলে মনে করি। এতে দেশের জন্য মঙ্গল হবে, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে, নবদিগন্তের সূচনা হবে। কিন্তু এই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ব্যর্থ হলে বহুবিধ সংকট দেখা দেবে। তবে সবাই বিশ্বাস করতে চায়, আলোচনার মধ্যে মতবিরোধ হতেই পারে, কিন্তু পরিশেষে দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে গিয়ে উভয়পক্ষ ছাড় দেবে এবং অনেক বিষয়ে সমাধান আসবে। পুরো জাতি এমনটিই প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। যেহেতু আমরা আলোচনায় যাচ্ছি, এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সে পর্যন্ত আমাদের চুপ থাকতে হবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে। বিশ্বাস করি-এটি হবে ঐতিহাসিক বৈঠক এবং এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে।’ তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে বিএনপি। যৌক্তিক সময়েই নির্বাচন হবে বলে জাতি প্রত্যাশা করে। আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনসহ সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শুধু বিএনপি নয়, পুরো জাতি এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে। বৈঠকের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা সবার। সেক্ষেত্রে উভয়দিক থেকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। তারা বিশ্বাস করতে চান, বৈঠক শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমান হাসিমুখে বেরিয়ে আসবেন। তাদের সেই প্রত্যাশিত হাসিই বলে দেবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈঠকের সমাপ্তি ঘটেছে। অতঃপর ফলাফল দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বিএনপি।

সাবেক মন্ত্রী ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের দিনক্ষণের ধোঁয়াশা কেটে যাবে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে পতিত স্বৈরশাসকের উসকানি এবং সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, আশা করছি এই বৈঠকের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধান আসবে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টায় লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

তিনি জানান, শুক্রবার লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকের নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা (আলোচ্যসূচি) নেই। তারেক রহমান এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। উনারা যখন বসবেন, তখন বাংলাদেশের এখনকার যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় নির্বাচন, জুলাই চার্টার (জুলাই সনদ) এগুলোর যে কোনো বিষয়ে আলাপ হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Licence No- TRAD/DSCC/210965/2019 and applied for registration.

Community Verified icon
 

Community Verified icon