1. info@dailyshadhinbarta.com.bd : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

চাকরির প্রলোভনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে পাঠানো চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার

বার্তা ডেস্ক:
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনে চকোলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার অথবা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করতো একটি চক্রটি। 

এভাবে অনেক বাংলাদেশি যুবককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া সেই চক্রের মূলহোতা মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইন (৪০) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির টিএইচবি (মানব পাচার প্রতিরোধ) শাখা।

গ্রেফতারকৃতের নাম আলমগীর। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার আমতলী মাঝের পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ ইছহাকের ছেলে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়।শুক্রবার (১৩ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। 

তিনি জানান, এই চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চকোলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার অথবা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠায়।  সেখানে তাদেরকে ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাদেরকে দাস হিসেবে রাশিয়ান সোলজারদের কাছে হস্তান্তর করে। সেখানে তাদের  সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করে। এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ভুক্তভোগীদের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

তিনি আরও জানান, যুদ্ধে নাটোর সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামক জনৈক ব্যক্তি নিহত এবং ঢাকা কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামে একজন গুরুতর আহত হন। আগের ১০ জনের মধ্যে একজন ভুক্তভোগী নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ফিরে এসে অন্যান্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী (ঝুমু আক্তার) বনানী থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা করেন। 

তদন্তে সিআইডি যা পেয়েছে 

সিআইডি জানিয়েছে, একইভাবে ১০ জনের আরেকটি দল সৌদি আরবে অবস্থান করছে। রাশিয়া নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করানো বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে অস্বীকার করেছে এবং তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছে না এবং দেশে ফিরতেও পারছে না।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে সিআইডির টিএইচবি শাখার একটি টিম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ফাবিহা জেরিন তামান্না ড্রীম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার।

সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একইসঙ্গে মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নিবিড় তদন্ত এবং গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Licence No- TRAD/DSCC/210965/2019 and applied for registration.

Community Verified icon
 

Community Verified icon