1. info@dailyshadhinbarta.com.bd : দৈনিক স্বাধীন বার্তা : দৈনিক স্বাধীন বার্তা Shadhin Barta
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা: কান্দাপাড়ায় ঝরল এক প্রাণ সীমান্তে ফের বড় সাফল্য, ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণসহ চোরাচালান জব্দ করল ৪৯ বিজিবি অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি পাকিস্তান-আফগানিস্তান: তুরস্কের ঘোষণা যৌন কেলেঙ্কারির জের: ‘প্রিন্স’ মর্যাদা ও রাজপ্রাসাদে ঠাঁই হারাচ্ছেন অ্যান্ড্রু যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ২৪ হাজার টন ত্রাণ পৌঁছেছে: জাতিসংঘ প্রবাস নয়, দেশেই ‘কমলা’ চাষে ভাগ্য বদল শার্শার আবু হানিফের কাশি দিয়ে ধরা পড়লেন, খাদ্য বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষার জালিয়াতি চক্রের ৩ সদস্য আটক যশোরে ফের ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার স্বর্ণসহ পাচারকারী আটক নেত্রকোনায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন নভেম্বর মাসে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান — প্রস্তুত বিএনপি

হাওর সুরক্ষায় মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার : রিজওয়ানা

নিজস্ব প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাওর সুরক্ষায় একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে সরকার। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি হাওরে বাঁধ নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, পর্যটন সুরক্ষা ও নীতিমালা প্রণয়নসহ চারটি প্রধান পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে ‘হাওরের সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের আয়োজন করে নেত্রকোণা সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল গ্রিন কনসার্ন ফাউন্ডেশন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রফিক মুহাম্মদ।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, হাওরের ইকো সিস্টেম পৃথিবীতেই বিরল। এটিকে অবশ্যই সুরক্ষিত করতে হবে। হাওরের সীমানা নির্ধারণ করে কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলনের মতো ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। এই সেমিনারে যারা আছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে হাওরের চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলে আসছেন। আমিও হাওরের মানুষ, হবিগঞ্জের। তাই হাওর নিয়ে কেউ কথা বললে আমার আবেগে নাড়া দেয়।

তিনি বলেন, হাওরের সীমানা নির্ধারণেও ভিন্নতা রয়েছে। কিছু পুকুর, কিছু খাল, কিছু নদী—বাকিগুলো ধানিজমি, যা মানুষের নামে রেকর্ডকৃত। ফলে হাওরের মালিকানায় অনেকেই যুক্ত থাকায় ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে হাওরের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য দেশব্যাপী কর্মশালা করা হয়েছে। সেখানে প্রাপ্ত মতামতগুলো মাস্টারপ্ল্যানে যুক্ত করা হয়েছে, প্রয়োজনে সংশোধনও করা হয়েছে। শিগগিরই তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে সময়মতো কাজ শুরু না হওয়ার পেছনে বাস্তবতা রয়েছে। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে পানি না নামলে কাজ শুরু সম্ভব হয় না। তাই আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে সেটা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এবার নিজেই দায়িত্বে থেকে বুঝেছি, কাজ শুরু না হওয়ার পেছনে বাস্তব কারণ রয়েছে—পানি তখনো নামে না।

হাওরের বাঁধ নির্মাণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, যাকে কাজে যুক্ত করা হয় না, সে অনেক সময় জমি দিতেও রাজি হয় না। সবকিছুতেই রাজনীতি চলে আসে। তাই আমরা এমন সংশোধনী আনতে যাচ্ছি, যাতে যারা প্রকৃত শ্রম দিয়ে কাজ করবেন, তারাই যেন প্রকৃত অর্থে লাভবান হন। এটা ৫০/৫০ না ৭০/৩০—সেই অনুপাতে বিবেচনা করা হচ্ছে। এছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হলো, বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না।

বৃক্ষরোপণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি নিজেই হালকালুকি হাওর নিয়ে মামলা করেছি। সেখানে লক্ষাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তখন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কত গাছ লাগানো হয়েছে—তারা ফাইল দেখাতে পারেননি। সম্প্রতি জরিপ করে কোন কোন হাওরে বৃক্ষরোপণ সম্ভব, তার একটি তালিকাও প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে আজকের সেমিনারে পাওয়া তথ্যে বুঝতে পারলাম, শুধু গাছ লাগালেই হবে না—একটি কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থাও প্রয়োজন।

তিনি বলেন, হাওর পর্যটন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠছে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন কাজ করলেও পর্যটন নিয়ন্ত্রণে এখনো পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন নেই। হাওর অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। কোন হাওরে কয়টি নৌকা যাবে, সেটা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে। সরকার সব কিছু করে না—তবে কাঠামো তৈরি করে দেয়। পর্যটকরা যদি হাওরে গিয়ে গান-বাজনায় আওয়াজ করে, তাহলে সরকারের পক্ষে ২০ বা ৫০ হাজার মানুষকে পাহারা দেওয়া সম্ভব না। এর দায় পর্যটকদের নিজেদেরও নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই জাহাজে উঠার সময় সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে যায়, গিয়ে শব্দ করে বারবিকিউ পার্টি করে। অথচ প্রকৃতিকে দেখার জন্য ট্যুরিজম, এটা গান শোনার বা পার্টি করার জায়গা নয়। হাওরে ইকো-ট্যুরিজমের প্রসার ঘটাতে হবে। তাই আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা নিতে হবে, যেখানে নির্ধারিত কিছু স্থান থেকে পর্যটক ওঠানামা করবে এবং সেখানে মনিটরিং বাড়ানো হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ভলান্টিয়ার নিয়োগ করে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন নেত্রকোণা সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকার সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী খান লিথো। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের সাবেক পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মাহবুব হাসান শাহীন, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. হাবিবুর রহমান, বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, গ্রিন কনসার্ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক তাহমিনা খানম, বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির বার্তা প্রধান ইলিয়াস হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা’র সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
LICENCE NO- TRAD/DSCC/210965/2019 and applied for registration.
Community Verified icon
 

Community Verified icon