ক্রান্তিকালে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের বিদায়ী মিশনপ্রধান আন্দ্রে কার্সটেন্স।
তিনি বলেছেন, ‘মানুষ আপনাকে মনে রাখবে’। একইসঙ্গে তিনি সাম্প্রতিক ‘জুলাই ঘোষণা’-কে দেশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার এক ‘ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বিদায়ী সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে আন্দ্রে কার্সটেন্স গত এক বছরে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর ক্রান্তিকালীন সময়ে বাংলাদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এ ছাড়া গণতান্ত্রিক সংস্কার ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার নিরলস প্রচেষ্টার কথাও তিনি বিশেষভাবে তুলে ধরেন। ডাচ দূত নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে ‘চমৎকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এই পদক্ষেপ দেশকে সাধারণ নির্বাচনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বৈঠকে চলমান রোহিঙ্গা সংকট এবং এ বিষয়ে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়েও আলোচনা হয়। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা।
সাক্ষাৎকালে আন্দ্রে কার্সটেন্স বাংলাদেশের ‘জেন-জি’ প্রজন্মের নেতৃত্বে সংঘটিত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে উদ্যাপন করতে নিজের লেখা একটি গান অধ্যাপক ইউনূসকে উপহার দেন। জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত ‘বাংলাদেশ’ গানের সুরে তিনি গানটির কথা লিখেছেন। গানটির একটি ধারণকৃত ও চিত্রায়িত সংস্করণও বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।
গানের কথায় তিনি লিখেছেন (বাংলায় অনূদিত):
‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ
বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষে ভরা, বেশ ভালো আছে
বিপ্লব পথ তৈরি করেছে
যা তারা বলতে চায় তা বলার জন্য
শুধু রূপকথা নয়, এক পবিত্র আকাঙ্ক্ষা
বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য।’
গানের অন্য অংশে বলা হয়েছে:
‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ
বঙ্গোপসাগরের তীরে এ এক পুনরুত্থান
বিপ্লব পথ দেখিয়েছে
বহু বছর পথভ্রষ্ট থাকার পর
জেন-জি দেখিয়েছে পথ
দুঃস্বপ্নকে দিনে পরিণত করেছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফি সিদ্দিক এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।