নেত্রকোণা, ৩০ জুলাই ২০২৫: নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাড়লা গ্রামে একসময় কৃষকদের আশার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল একটি গভীর নলকূপ সেচ প্রকল্প। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন পাইকুড়া ইউনিয়নের – চেয়ারম্যান এডভোকেট নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া সাহেবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর অর্থায়নে এবং বাড়লা কৃষি সমবায় সমিতির তত্ত্বাবধানে এটি স্থাপন করা হয়েছিল।
প্রায় এক দশক ধরে, অর্থাৎ ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত, এই প্রকল্প বাড়লা গ্রামের ফসলি জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই চিত্র আজ পুরোপুরি ভিন্ন। বর্তমানে এই গভীর নলকূপ সেচ প্রকল্পটি প্রায় ৪০ বছর ধরে সম্পূর্ণ অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
যে স্থাপনা একসময় গ্রামের কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক ছিল, তা আজ খোলা আকাশের নিচে অযত্নে পড়ে আছে, যার আংশিক কাঠামো এখনও দৃশ্যমান। মরিচা ধরা লোহার পাইপ আর ভাঙা কংক্রিটের অংশগুলো যেন বাড়লা গ্রামের কৃষকদের দীর্ঘশ্বাসকেই তুলে ধরছে।
আধুনিক কৃষিতে সেচ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ, এই প্রকল্পটি দীর্ঘকাল ধরে বন্ধ থাকায় বাড়লা গ্রামের কৃষকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। শুষ্ক মৌসুমে সেচের অভাবে অনেক জমি অনাবাদী থাকছে, যার ফলে কৃষকদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, দ্রুত এই সেচ প্রকল্পটি সচল করা হোক। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বিএডিসি যদি এই বিষয়ে নজর দেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তাহলে বাড়লা গ্রামের কৃষকরা আবারও তাদের জমিতে স্বাচ্ছন্দ্যে ফসল ফলাতে পারবেন এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে থাকা এই সেচ প্রকল্পটি বাড়লা গ্রামের কৃষকদের জন্য যেন এক মূর্ত প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে—সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যার সুফল থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।