মানব পাচারের অভিযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানা পুলিশ এক চীনা নাগরিকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে তিন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চীনা নাগরিক লি ওই হাও (LI WEI HAO) এবং তার সহযোগী দালাল মো. ফরিদুল ইসলাম। ফরিদুল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সুখদেব পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল হানিফ মিয়ার ছেলে।
উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীরা হলেন: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কমলপুরের ১৮ বছর বয়সী আলফা আক্তার, একই উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের ২০ বছর বয়সী লিজা আক্তার এবং জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গোপী নদী গ্রামের ১৭ বছর বয়সী বৃষ্টি।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। পুলিশ জানায়, গত ১ সেপ্টেম্বর চীনা নাগরিক লি ওই হাও নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌরসভার কমলপুর এলাকার গার্মেন্টসকর্মী আলফা আক্তারকে বিয়ে করেন।
তিনি আলফাকে চীনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর তাদের চীনে যাওয়ার কথা ছিল। আলফা আক্তার তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এবং স্বামী লি ওই হাওকে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে আসেন।
তাদের সঙ্গে ফরিদুল ইসলাম নামে এক সন্দেহভাজন দালাল এবং আরও দুজন মেয়ে ছিলেন। ওই দুইজনের মধ্যে একজন, জামালপুরের মেয়ে বৃষ্টির, আরেকজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে ১৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়।
পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা লি ওই হাওয়ের কাছে তার পাসপোর্ট এবং বাংলাদেশে থাকার বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান। কিন্তু তিনি কোনো বৈধ ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। তার সহযোগী ফরিদুলও কোনো সন্তোষজনক উত্তর বা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এতে সন্দেহ আরও বেড়ে গেলে আলফার পরিবার তাদের আটকে রাখে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে কেন্দুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চীনা নাগরিক ও তার সহযোগী ফরিদুলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।