 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বুধবার রিয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সফরকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা হয়েছে, যেকোনো এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন উভয় দেশের বিরুদ্ধেই আগ্রাসন বলে গণ্য হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, নয়াদিল্লি বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চুক্তির খবর দেখেছি। সরকার এ বিষয়ে অবগত ছিল, যা আসলে দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। আমরা জাতীয় নিরাপত্তা ছাড়াও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব খতিয়ে দেখব।’
এদিকে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস চুক্তিটিকে ‘গভীর উদ্বেগের বিষয়’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কঠোর সমালোচনা করেছে।
দলটির নেতা জয়ারাম রমেশ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘অপারেশন সিদুঁর’ হঠাৎ বন্ধের মাত্র এক মাস পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে হোয়াইট হাউসে লাঞ্চে আমন্ত্রণ জানান—যিনি পেহেলগামের এপ্রিলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলার উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সন্ত্রাসীদের অক্সিজেন জুগিয়েছিলেন।’
রমেশ সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের দিকে ইঙ্গিত করে লিখেন, ‘এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদির চীনের সফর শেষে ফিরতেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিকে বেইজিংয়ের গোপন সামরিক কমপ্লেক্সের দরজা খুলে দেন। আর এখন সৌদি আরব—পাকিস্তানের সঙ্গে কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি করল। এটি নিঃসন্দেহে ভারতের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর তথাকথিত ব্যক্তিনির্ভর কূটনীতির আরেকটি ব্যর্থতার প্রমাণ।’
সৌদি প্রেস এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, চুক্তির লক্ষ্য হলো প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করা এবং যেকোনো বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।চুক্তি নিয়ে এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, এটি বহু বছরের আলোচনার ফলাফল, কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা দেশের প্রতিক্রিয়া নয়। তবে তিনি স্পষ্ট করেননি যে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এর আওতায় আসবে কি না।
সাম্প্রতিক সময়ে আরব লীগ ও ওআইসি’র যৌথ অধিবেশনে দোহায় ইসরাইলি হামলার নিন্দার মধ্যে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ন্যাটোর মত যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দাবি উঠেছে।
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উদ্বেগ সত্ত্বেও সৌদি এক কর্মকর্তা বলেন, রিয়াদের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক ‘আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে মজবুত’ এবং সেই সম্পর্ক বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।