মৌলভীবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে। প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের বিরুদ্ধে ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা স্কুল ফান্ড এবং ৩৭ লক্ষ টাকা এফডিআর আত্মসাৎ, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, তিনি অডিট এড়াতে একের পর এক কৌশল গ্রহণ করে আসছেন।
প্রথমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে অডিটের উদ্যোগ নিলে রাশিদা বেগম ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করে অডিট স্থগিত করেন। তবে সেই মামলার রিট ২০ মে ২০২৫ তারিখে খারিজ হয়ে যায়। রিট খারিজের পর ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একটি কেন্দ্রীয় অডিট টিম স্কুলে আসে। অডিট শেষে রাশিদা বেগম যখন অফিসারের গাড়িতে করে বের হচ্ছিলেন, তখন শিক্ষার্থীরা তাকে গেইটের ভেতর প্রায় ৪০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখে; পরে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহায়তায় তিনি ছাড়া পান।
এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবার ১ জুলাই নতুন করে অডিট চিঠি দেন এবং ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে অডিট নির্ধারিত হয়। পুলিশ প্রটেকশন থাকার পরও প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগম সেই দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন ও ফোন রিসিভ না করে কার্যত অডিট থেকে পালিয়ে যান।
অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান, টিফিনের টাকা নেওয়া হলেও খাবারের ব্যবস্থা নেই, আইডি কার্ড বা ডায়েরি দেয়া হয় না, অথচ হাতে হাতে টাকা নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা বলেন, এতবড় দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি বহাল তবিয়তে পলাতক আছেন — এটা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ভয়ানক সংকেত।
অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের অপসারণ এবং নতুন যোগ্য প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় এক সপ্তাহের মধ্যে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।