নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ দেখতে আসা পর্যটক এবং এলাকার হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রধান সড়কের বেহাল দশা এখন এক বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোয়াইলবাড়ি থেকে পাইকুড়া বাজার হয়ে শিমুলতলা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটারের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির করুণ অবস্থা সাধারণ মানুষ এবং পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে মারাত্মক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।
সড়কটির করুণ দশা ও জীবনের ঝুঁকি মুঘল আমলের ঐতিহাসিক এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু পর্যটকের সমাগম ঘটে। কিন্তু ভাঙাচোরা ও অপ্রশস্ত রাস্তার কারণে যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে বর্ষাকালে খানাখন্দে ভরা রাস্তায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, জরুরি প্রয়োজনে কোনো রোগীকে দ্রুত কিশোরগঞ্জ বা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে হলে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে অনেক সময় মূল্যবান জীবনহানির ঘটনাও ঘটে।
অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব
এই সড়কটি শুধু পর্যটন বা যাতায়াতের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি এলাকার অর্থনীতিরও প্রাণকেন্দ্র। পাইকুড়া অঞ্চল সবজি ও ধান উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। এখানকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য যেমন ধান, চাল, শাক-সবজি এই সড়ক দিয়েই ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হয়।
কিন্তু রাস্তার দুরবস্থার কারণে পরিবহনে অতিরিক্ত সময় লাগছে এবং পণ্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিন জেলার সংযোগস্থল, তবুও অবহেলিত স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি, সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও প্রশস্ত করা হোক। তৎকালীন ১৯৮৮-৮৯ সালে পাইকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান – এডভোকেট নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি শিমুলতলায় সংযোগ করে তিন জেলার (নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ) সংযোগ স্থল হিসেবে এর গুরুত্ব অনেক বাড়িয়ে ছিলেন।
এই রাস্তাটি পেমই পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের জরুরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেও ব্যবহৃত হয়। ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও রাস্তাটি আজ অবহেলিত। এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা জরুরি ভিত্তিতে এই রাস্তাটি মেরামতের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। পর্যটন শিল্পের বিকাশ, স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সড়কটির দ্রুত সংস্কার এখন সময়ের দাবি।