শিশু-কিশোরদের মধ্যে আশংকাজনক হারে বেড়েছে মোবাইল আসক্তি। অনলাইন সহজলভ্য হওয়ায় শিশু-কিশোররা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থেকে সরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে এক অনিশ্চিত জীবনের দিকে।
তারা পাঠ্যবই ছেড়ে ব্যাস্ত হয়ে পরেছে ইন্টারনেটভিত্তিক গেমস ও নানা ভিডিও দেখা নিয়ে। এছাড়াও গ্রাম পর্যায়ের শিশু-কিশোরদের মধ্যে এখন টিকটক আর লাইকি নিয়ে উন্মাদনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বখাটেপনা ও নানান অনৈতিক কাজও করে বেড়াচ্ছে উঠতি বয়সী কিশোররা। সংঘটিত হচ্ছে কিশোর অপরাধ।
বর্তমান সময়ে মোবাইল সেট অর্থাৎ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায় শিশু-কিশোরদের। প্রাথমিকের গণ্ডি পার না হওয়া এক শ্রেণির শিশু থেকে শুরু করে উঠতি বয়সীদের হাতে হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় ইন্টারনেটভিত্তিক নানা গেমস নিয়ে মেতে থাকে কিশোরদের দল।
স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট হাতের মুঠোয় থাকায় সহজেই পর্নো ভিডিওসহ অশ্লীল ও অনৈতিক ভিডিও দেখার সুযোগ অনায়াসেই পেয়ে যায় অপরিণত বয়সীরা। আর এসব শিশু-কিশোরই একটু বড় হলে জড়িয়ে যাচ্ছে নানা অপকর্মে। দলবেঁধে আড্ডা দেওয়া, মাদকদ্রব্য গ্রহণ, মেয়েদের উত্তক্ত করাসহ নানা অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে তারা।
এই জন্য জাতিকে মেধাশূন্য হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে রাত ১২টার পর ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে টিএসসিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন তিনি ।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে রাত জেগে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্যই আমার এই পরামর্শ। তবে যারা বিদেশের সঙ্গে ব্যবসা করেন, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে চলা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে দেশে সুস্থ জীবনযাপন করা খুব কঠিন হবে।
তিনি বলেন, এটা জাতির জন্য এলার্মিং যে, আমরা লেখাপড়া রেখে মোবাইলে মনোনিবেশ করছি। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে জাতি মেধাশূন্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বাড়ানো প্রয়োজন। গবেষণা না থাকলে মেধার সংকট দেখা দেবে।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পার্ট-টাইম চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, পৃথীবির প্রায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পার্টটাইম চাকরির সুযোগ আছে। এটা আমাদের দেশেও সম্ভব। ছাত্রদের হাতে যদি একটা পার্টটাইম কাজ থাকে তবে তাদের লেখাপড়া করতে সমস্যা হবে না।