নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লাতে ৬ষ্ঠ শ্রেনির এক কিশোরী ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার ১৭ বছর পর রায় হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় এ মামলায় ৪ জনকে মূত্যুদন্ড ও এক নারী আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্দ প্রদান করেছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এই মামলার আরেক অভিযুক্তক নাসরিন বেগমকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক (শ্যামল) এ রায় ঘোষণা করেন। ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মোঃ কামরুল হাসান, মোঃ রবিউল, শুক্কুর আলী ও মোঃ আলী আকবর। আসামীদের মধ্যে রবিউল ও ডলি বেগম সাময়ীক জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। এ সকল আসামীদের স্থায়ী নিবাস নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার বক্তবলী এলাকাতে।
নিহত আফসানা আক্তার (১১) নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার চরবাজারপুর এলাকার মোঃ আক্তার হোসেনের মেয়ে। নিহত নিপা মুসলিম, নগর কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনির ছাত্রী ছিলো। এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে নিহত নিপার পরিবাররা বলেন যে, আমরা রায়ে অত্যান্ত খুশি। দীর্ঘ বছর সন্তান হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় হলো আজ। এখন দ্রুত গতিতে রায় কার্যকর হলেই আমার মেয়ের আত্তা শান্তি পাবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, ২০০৫ সালের মে মাসের ২ তারিখে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চর রাজাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী আফসানা আক্তার (নিপা) তার ফুপুর বাড়ি লক্ষীনগর গ্রামে বড় বোনের সাথে দাওয়াত খেতে যায়। তারপর দিন সকাল থেকেই নিপা নিখোঁজ ছিলো। ঐ বছরই ৪ মে লক্ষীনগর গ্রামের একটি ধইঞ্চা খেত থেকে স্কুল ছাত্রী নিপার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ফতুল্লা থানা পুলিশের প্রথমে সন্দেহ হলে ডলি বেগমকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন ডলি পুলিশকে জানায় স্কুল ছাত্রী নিপাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করার পর হত্যা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডলি আদালতে ১৬৪ ধারার একটি জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকারীদের নাম পরিচয় জানায়। ডলি দেয়া জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ঐ আসামীরাও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিলে। দীর্ঘ ১৭ বছরে দীর্ঘ পর আলোচিত একটি মামলার রায় দিয়েছি। আদালত ন্যায় বিচার করেছেন এবং রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর রায়ে চারজন ফাঁসির আসামীর মধ্যে তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং বাকি একজন পলাতক ছিলেন আর যাবজ্জীবন আসামিও পলাতক রয়েছেন।