শুক্রবার (১৬ই জুন) সিআইডির ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান মামলাটি করেছেন বলে জানা যায়।
যশোরের বেনাপোলের আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে তিন বছরে ডলার ও সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সোনা পাচারের অভিযোগে মামলাটি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার আসামিরা হলেন- যশোরের শার্শা উপজেলার পুটখালী গ্রামের মৃত বুদো সরদারের দুই ছেলে আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারী নাসির উদ্দিন (৪০) ও ওলিয়ার রহমান (৩৪), সাহেব আলীর ছেলে রমজান আলী (২৯), দুর্গাপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৪৫), পুটখালী গ্রামের পূর্বপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে নাজমুল ইসলাম (৩৫)।
আরো আসামীরা হলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার নলচক গ্রামের আব্দুল সাত্তারের দুই ছেলে রুহুল আমিন (৪৫) ও রেজাউল করীম (৩৭), নৈয়াইর গ্রামের সিরাজ বেপারীর ছেলে শাহজালাল (৩৫), চাঁদপুরের মতলব উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়াজির ছেলে আরিফ মিয়াজি (৩৯), মাদারীপুর সদর উপজেলার বলসা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আবুল হায়াত জনি (২৮) এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজি গ্রামের আলিউল্লাহ বেপারীর ছেলে রবিউল আলম রাব্বি (২৯)।
সিআইডি ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের এসআই মেহেদী হাসান মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০২২ সালে জুন মাসে যশোর কোতয়ালি থানার একটি সোনা চোরাচালান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্তকালে বিভিন্ন সোর্স (সূত্র) ও পত্রপত্রিকার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানতে পারেন আসামিরা আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারী দলের সক্রিয় সদস্য। আরব আমিরাতের দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিমান বন্দর ব্যবহার করে সোনা বাংলাদেশে এনে ভারতে পাচার করে।
পাশাপাশি ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে ডলার নিয়ে আসে। আসামিরা বেনাপোলের পুটখালীর গরুর খাটালের ব্যবসা এবং বিভিন্ন জায়গায় জুয়েলারি ব্যবসার নামে সোনা পাচার ও ডলার এনেছে। তারা ভারতের গৌতমের কাছে সোনা পাচার করে থাকে। তারা স্থল বন্দর ও সীমান্তের অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে সোনা ভারতে পাচার করে থাকে।
একই পথ দিয়ে বিপুল পরিমাণ ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রা ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে থাকে। তিনি যশোরের বিভিন্ন সূত্র থেকে এই ১১জনের নাম পেয়েছেন; যারা এই চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার সোনা ও ডলার পাচার করেছে তারা। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে সিআইডি সদর দপ্তরের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম মামলা দায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সিআইডির ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান মামলাটি করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।