ময়মনসিংহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী রাজিয়া খাতুকে (৩০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উজানপাড়া মাজার থেকে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার তিন যুবকের দুইজন তাকে ধর্ষণ করে। তৃতীয়জন ধর্ষণের পর রাজিয়া খাতুনকে পানিতে মাথা চুবিয়ে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ পুকুরের একপাশে মাটিচাপা দেন বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (১৯ জুন) সকালে কোতোয়ালি মডেল থানা কার্যালয় থেকে পাঠানো পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার কোনাপাড়া কইট্রার মোড় এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে মো. আল আমীন (২৫), একই এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (২৬) ও চরনিলক্ষীয়া সাথিয়াপাড়া বড়বাড়ী এলাকার আব্দুল্লাহ ওরফে জাকিরুল ইসলাম (১৯)।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ জুন) গ্রেপ্তারকৃত তিন যুবক ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে সদর উপজেলায় চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের সাঁথিয়াপাড়া উজানপাড়া এলাকার একটি পুকুর থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় রাজিয়া খাতুন (৩০) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাজিয়া ওই এলাকার মৃত তাহের মিস্ত্রি ও আম্বিয়া খাতুনের মেয়ে। এ ঘটনার পর ওই দিন নিহত রাজিয়ার মা আম্বিয়া খাতুন অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মঙ্গলবার সকালে নগরীর মাসকান্দা থেকে একজন ও এর আগে সোমবার রাতে চর নিলক্ষীয়া এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার দিন মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে স্থানীয়রা আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখেছিল। সেই সূত্র ধরে তদন্তকালে তাকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর রুহুল আমিন ও আল-আমীনসহ তিনজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাজিয়া খাতুনকে গত ১২ জুন রাতে চর নিলক্ষীয়া উজানপাড়া মাজার থেকে ডেকে মাজারের পাশে থাকা শুকনা পুকুর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে রুহুল আমিন এবং আব্দুল্লাহ ওরফে জাকিরুল রাজিয়া খাতুনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বৃষ্টি আসায় তারা দুইজন মেয়েটিকে মো. আল আমিনের সঙ্গে মাজারে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে বৃষ্টি কমে গেলে মো. আল আমিন রাজিয়া খাতুনকে আবারও একই স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আল আমিন ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাজিয়া খাতুনকে পুকুরে জমা থাকা পানিতে মাথা চেপে ধরে হত্যার পর মরদেহ গুম করার জন্য পুকুরের মাঝে থাকা গর্তের ভেতর কাঁদা-মাটি দিয়ে চাপা দেয়।
পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের আদালতে সোর্পদ করা হলে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।