স্বৈরাচার সরকারের পতন হবার পর বিএনপি আজ নয়া পল্টনের নিজ কার্যালয়ে প্রথম সমাবেশ ডেকেছে। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
দীর্ঘ কয়েক বছর পরে বিএনপির কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের বাধ ভাঙা উচ্ছাস লক্ষ্ করা গেছে । গতকাল সোমবার দুপুরে স্বৈরাচার সরকারের প্রধান আওয়ামীলীগের সভানেত্রী তার হাজার হাজার নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে রেখেই পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে এটিই বিএনপির প্রথম সমাবেশ। উক্ত সমাবেশে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী রাতেই কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হতে শুরু করেছে।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই হাজারো নেতা-কর্মী ভীড় করছেন বিএনপির এই কার্যালয়ের সামনে। সেখানে বিরতিহীনভাবে নেতা-কর্মীরা আসছেন। কেউ স্লোগান দিচ্ছেন, কেউবা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে রাজধানী জুড়ে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৬ জুলাই রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালিয়ে ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এ ছাড়া কার্যালয়টির প্রধান ফটকের সামনে ‘ক্রাইম সিন’ লেখা হলুদ ফিতাও টাঙিয়ে রাখা হয়েছিলো। পরে ১৯ জুলাই ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু নেতা-কর্মী ওই তালা ভেঙে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর ২০শে জুলাই বিএনপির লোকজন নিজেরাই কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
গ্রেপ্তার এড়াতেই ওই দিনের পর থেকে দলটির কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাননি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর জানাজানির হওয়ার পর গতকাল বিকেলে বিএনপির কার্যালয়ের মূল ফটকের তালা খুলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করেন।
গতকাল বেলা দুইটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত এক নেতার জানাজা হচ্ছে। এতে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। আল আমিন হোসেন নামের ওই নেতার জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পরও দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও ভেতরে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অবস্থান নিয়েছিলেন।
এর আগে কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ অনেকেই আসেন। তাঁরা আগত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। কার্যালয়ের সামনে আগত নেতা-কর্মীদের ‘পালাইছে রে পালাইছে/ শেখ হাসিনা পালাইছে’, ‘হই হই রই রই/ শেখ হাসিনা গেলি কই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। দেশের সাধারণ জনগণের পাশাপাশি বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দের স্বৈারাচার সরকারের বিদায়ে আনন্দ ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।