ফেনী জেলার দাগনভুঞা উপজেলায় ভোজ্য তেলে আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি অফিস সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দাগনভুঞা উপজেলায় সরিষা আবাদ করা হয়েছে ২৩০ হেক্টর জমিতে। ফলে গত বছরের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছে সরিষা আবাদ।

আমদানি নির্ভরতা কমাতে ব্যাপক পরিমাণ সরিষা আবাদ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে দাগনভুঞা উপজেলা কৃষি বিভাগ। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, স্বল্প খরচে ও কম সময়ে উৎপাদন করা হয় সরিষা।

তাই বর্তমানে কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুকছে। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে তারা ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ফলন বেশি হওয়ার কারণে উন্নত জাতের সরিষা চাষের ক্ষেত্রে কৃষকরা বেশ আগ্রহী হচ্ছেন। উন্নত জাতের সরিষা বারি-১৪ ও বারি-১৫ গাছের উচ্চতা হয় সাধারণত দেড় থেকে দুই ফুট। বীজ বপন করার পর ৭০ দিনের মধ্যেই জমি থেকে সরিষা সংগ্রহ করা যায়।

সরিষার একমাত্র বড় শত্রু হলো জাব পোকা। দাগনভুঞায় এখন পর্যন্ত কোন উপকার জাব পোকা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, ৬০০ বিঘা জমির জন্য সরিষা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ৬০০ জন কৃষকের জন্য সরিষা বীজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস সূত্র আরো জানিয়েছেন, সরিষার পাতা মাটিতে পড়ার ফলে জৈব সারের কাজ করায় জমির উর্বরতা আরো বৃদ্ধি পায়।

এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬ থেকে ৭ মন সরিষার উৎপাদন আশা করছেন তারা। সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার চলতি রবি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।

দাগনভুঞা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের সেকান্দপুর এলাকায় কৃষক আব্দুল মান্নান কৃষি অফিসের সহায়তায় ২২০ শতক জমিতে উন্নত মানের সরিষা আবাদ করেছেন। এছাড়া একই এলাকার কৃষক আব্দুস শহীদ ৫৫ শতক এবং কৃষক জসিম ৫০ শতক জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, আমাদের দেশে ভোজ্য তেলের বড় একটি অংশ আমদানি করতে হয়। এই আমদানি নির্ভরতা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনতে কৃষকদেরকে সরিষা চাষের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখানো হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কৃষকদেরকে সরিষা বীজ এবং সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।