চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয় লোহাগাড়া থানা পুলিশ। সোমবার(৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার সময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে পুলিশ। আটককালে তাদের নিকট হতে ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’র কপি, সীল উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত আসামিরা হলেন ১। আলমগীর(২৬), সে উপজেলার লোহাগাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মাষ্টার পাড়ার দোহা বিল্ডিংয়ের আব্দুর রশিদের পুত্র, ২। শাহ আলম(৫০), সে একই উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের আলি সিকদার পাড়ার মৃত হাফেজ আব্দুস সালামের পুত্র, ৩। মো: নাজাত(২৩), সে উপজেলার লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বিল্লা পাড়ার মৃত আকতার কামালের পুত্র।
থানা সুত্রে জানা যায়, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জালিয়াতি হচ্ছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু বিপিএম-সেবা’র নির্দেশনায়, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী তত্বাবধানে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আরিফুর রহমান’র নেতৃত্বে লোহাগাড়া থানায় কর্মরত এসআই(নিরস্ত্র)/গোবিন্দ্র চন্দ্র দাস ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯ টার সময় লোহাগাড়া থানাধীন আমিরাবাদ বাজারে অবস্থানকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমিরাবাদ ইউনিয়নের কাজিরপুকুর পাড় দোহা বিল্ডিং-এ আলমগীর নামক এক ব্যক্তি ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিয়ে ভিসা প্রসেসিং করার জন্য জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বানিয়ে নিজ হেফাজতে রাখার দায়ে তাকে আটক করা হয়।
তার কাছ থেকে ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। আটক আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে স্বীকার করেন উক্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স টি আল আকছা ট্রাভেলস-এর মালিক শাহ আলমের নিকট থেকে ২৮ হাজার টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করেছে।
সে আরও জানায় তার নামে ফৌজদারী মামলা থাকায় সে এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটি নেওয়ার চুক্তি করে আল আকসা ট্রাভেলসের সাথে। তার দেওয়া তথ্য মতে আল আকসা ট্রাভেলসে উপস্থিত হয়ে তল্লাশি করা হয় এবং শাহ আলমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিতে উক্ত জালিয়াতির আলামত পাওয়া যাওয়ায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয় এবং তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত আসামী শাহ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় উক্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটি জনৈক মোঃ বেলাল (৩৫) এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। ভিন্ন আরেকটি সুত্র মতে লোহাগাড়া থানার সামনে কম্পিউটার দোকানদার মোঃ নাজাত নামক এক ব্যক্তি ভূয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ বানিয়ে দিয়ে ব্যবসা করে আসতেছে এমন তথ্য অনুযায়ী তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তাকেও আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি সীল উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় ৭ জন এবং অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আরিফুর রহমান জানান, অভিনব কায়দায় জাল-জালিয়াতির ঘটনায় ৩ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে, বাকিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।