মোঃ আবু নাঈম, মালায়শিয়া প্রতিনিধিঃ কমছে আক্রান্ত-মৃতের হার, করোনা নিয়ন্ত্রণে চমক দেখাচ্ছে মালয়েশিয়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ও আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে গোটাবিশ্ব। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে প্রতিনিয়তই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। তবে এ ভাইরাস মোকাবিলায় চমক দেখাচ্ছে এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া।
কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মালয়েশিয়া কীভাবে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করছে, এ অভিজ্ঞতা অন্য ১০ দেশের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে এক বিশেষ সামিটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি।
এ সময় তিনি করোনা মোকাবিলার সফলতার কথাও উল্লেখ করেন। ভাইরাসকে পরাজিত করতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ। সেইসঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও কমছে প্রতিদিন।
মৃত্যুর হারও আগের মতো আর নেই। যাদের মৃত্যু হচ্ছে তাদের অধিকাংশই ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে ভুগছিলেন আগে থেকেই। দেশটিতে আতঙ্কের বদলে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি। যেখানে প্রতিদিন ২০০ এর বেশি আক্রান্ত হতো সেখানে বর্তমানে আক্রান্ত কমে গেছে অনেকটাই।
আইসিইউতে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে সুস্থ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত।চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বুধবার (১৫ এপ্রিল) মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রি-কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
১৫ এপ্রিল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৬৪৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন তবে ভাইরাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দেশটিতে চলছে লকডাউন।
ইতিমধ্যেই চলমান লকডাউনে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছেন নাগরিকরা। এছাড়া দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি অভিবাসীদের জন্য ভিসা ফি (লেভি) ২৫ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। চালু করা হচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানা। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেই খুলে যাবে সব।
ইতিমধ্যেই সরকারের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে নাগরিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এরই মধ্যে সে দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব উস্তাজ এভিট লিউ খাদ্য সহায়তা দিয়ে দেশি বিদেশিদের প্রশংসায় ভাসছেন।
দেশটির বিভিন্ন প্রকল্পে দেশি-বিদেশি শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন এভিট লিউ।এছাড়া দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিরলস চেষ্টাসহ খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংসক্তি বাসায় বাসায় গিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা।
তবে রাজধানী শহরের বাইরে এ খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কারণ কুয়ালালামপুরের বাইরে যারা অবস্থান করছেন, তারা বেশি খাদ্য সংকটে রয়েছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন।
এছাড়া যে সকল মালিক ও কোম্পানি শ্রমিকদের বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে সেইসব মালিক পক্ষকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে তদারকি করা হচ্ছে এবং সে দেশের সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
যাতে করে বাংলাদেশি কর্মীরা কোনো প্রকার অভুক্ত না থাকতে হয়।তবে বিগত দিনে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে মালিক বদলে বিভিন্ন এজেন্টের নামে ভিসা যারা করেছেন, করোনার বিধিনিষেধের কারণে তারা সমস্যায় ভুগছেন।
পাশাপাশি অবৈধরাও রয়েছেন খাদ্য সংকটে। এমন পরিস্থিতিতে কমিউনিটি সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে যার যার মতো করে তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন অনেকে।