নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে কোনো ভিআইপি নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় করা রিটের শুনানিতে বুধবার এ মন্তব্য করেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট যুগ্ম সচিব ও ফেরির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে কোনো ভিআইপি নেই। বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের চাকর।’
এ সময় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিতাস ঘোষের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন।
গত বুধবার (২৪ জুলাই) মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তিতাস ঘোষ। তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার তাকে নেওয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসা অব্যাহত রেখে দ্রুত ঢাকায় পৌঁছাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকায় আইসিইউ সুবিধা সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়।
তিতাসকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ১ নম্বর ফেরি ঘাটে পৌঁছায়। ওই সময় একটি ফেরি ঘাটেই ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের অতিরিক্ত সচিব আব্দুস ছবুর মন্ডল এই ঘাট দিয়ে ফেরি পারাপার হবেন— এমন কারণ দেখিয়ে ফেরিটি ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। প্রায় তিন ঘণ্টা পর ফেরিটি ছাড়লেও অন্য প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা তিতাস মারা যায়।
এদিন তিতাসের পরিবারকে কেন ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। সেই সঙ্গে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে মন্ত্রণালয়ের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।